জুবায়ের হোসেন বাপ্পি, গাজনা বিল (পাবনা) থেকে ফিরে: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লিলা ভূমি গাজনার বিল। আঁকাবাঁকা পিচঢালা সরু পথ। দুই পাশ ঘিরে রেখেছে অকৃত্রিম সৌন্দর্য। গাছপালা, অঢেল সবুজের সমারোহ, ছোটো-বড় দীঘি, পাখির কলরব যেন বাতাসে সাঁতার কাটছে। শহুরে কোলাহলের ভিড়ে বাংলায় এখনো গ্রাম হারিয়ে যায়নি। সে কথাই মনে করিয়ে দেয় এ প্রকৃতি।
চারিদিকে সবুজ শ্যামল বিস্তৃত অপরূপ গাজনার বিলের বুক চিরে চলে যাওয়া সাতবাড়ীয়া-চিনাখড়া সড়কের মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল ব্রিজ।
এক সময় ব্রিজটি কেবল মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য নির্মাণ করা হলেও এখন তা এলাকার ভ্রমণ পিপাসু মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
প্রায় ১৫ ফুট উঁচু মাটির টিলা। এর দক্ষিণে বিশাল বটবৃক্ষ। শান বাঁধানো চারপাশ। সেখানে চলছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জমাট আড্ডা।
গাজনার বিলের পরিধির বিশালতা কল্পনাকেও হার মানাবে। বিলে অগণিত জেলে নৌকা ভাসছে। মাছ ধরায় ব্যস্ত তাঁরা। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সারিবদ্ধ তালগাছ। একদল হাঁসের দেখা পাওয়া গেল বিলের জলে। দূরে থেকে গ্রামগুলো দেখতে দ্বীপের মতো মনে হয়।
বিল অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে কৃষিকাজ করে। তবে কৃষকদের অনেকেই বর্ষাকালে হয়ে যায় জেলে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও রয়েছে গুটি কয়েক। চাকরিজীবীর সংখ্যা নগণ্য। আর এইভাবে চলে আসছে বিলের প্রকৃতির পরিবর্তন ও সেখান কার মানুষের জীবনযাপন।
দিনের শেষে আকাশে সোনালী আভা ছড়িয়ে সূর্য তখন অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এক সময় মিলিয়ে গেল গহিন অন্ধকারের ফাঁকে। জানান দিচ্ছে, এবার ফিরতে হবে। মন এক রকম শূন্যতায় ভরে উঠলেও যেন এক অন্য আলোর আভাস।
তবে গাজনার বিল দূর থেকে আবারো আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ইরি মৌসুমের। বলছে, সবুজ ধানের ক্ষেতে বাতাসের খেলা দেখতে আবার আসবে তো !
যেভাবে যাবেন : পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলা বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এই বিলের অবস্থান। পাবনা-নগরবাড়ী সড়ক ধরে ৩৪ কিলোমিটার পূর্বে চিনাখড়া। এখান থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে রিকশা-ভ্যান অথবা সিএনজিই যোগে গেলে দেখা মিলবে গাজনা বিলের।
ঢাকা, ১৩, নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: