Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

সমুদ্র রক্ষায় শিক্ষার্থীদের ১০০ কি. মি. বিচ হাইকিং

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৫:৩৩

রিদুয়ান ইসলাম, জবি: সমুদ্র রক্ষায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এক অভিনব উদ্যোগ 'সী বিচ হাইকিং'। সমুদ্রে মানুষ ঘুরতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট, চানাচুরের প্যাকেট ইত্যাদি ময়লা সমুদ্রে ফেলে, যেগুলো সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের মৃত্যুর কারন হয়ে দাড়াচ্ছে। যা দিনেরপর দিন সমুদ্রের ভারসাম্য রক্ষায় হুমকির কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে! এমন অনেক সমস্যা নিরসনে মানুষকে বুঝানো, সঠিক পরামর্শ এবং সমুদ্র রক্ষার কাজে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান করাই হাইকিং এর মূল উদ্দেশ্য।

১০০ কিলোমিটার হাইকিং এ পাঁচজনের একটি টিমে ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আরাফাত হোসেন খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বি. এড. রায়হান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের আশিকুর রহমান তুরাগ এবং আরেক ভ্রমনপ্রিয় চাকরিজীবী স্বপন মোড়ল। এছাড়াও কবি নজরুল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী তোকান বাদশা তাদের সাথে ছিলো।

"Save_Ocean_Clean_Beach" এই স্লোগান কে সামনে রেখে চারদিনে ১০০ কিলোমিটার বিচ হাইকিং এর জন্য পয়লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এই টিম।

সাধারণত টেকনাফ জিরো পয়েন্ট থেকে হাইকিং শুরু হলেও তারা একেবারে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিন-পূর্ব জনপদ শাহ পরীর বীচের বি.জি.বি ক্যাম্প থেকে প্রথম দিনের হাইকিং শুরু করে। কচ্ছপিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার হাইকিং হয় প্রথম দিন।

"Save_Ocean_Clean_Beach"

 

দ্বিতীয় দিনের হাইকিং এ কচ্ছপিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মনাখালী সী বিচ পর্যন্ত ২৬ কি.মি.। তৃতীয় দিনের হাইকিং এ তাদের গন্তব্য সোনারপাড়া হাফ মুন বিচ। এদিনের দূরত্ব ছিলো ২৫ কি. মি.। এবং সর্বশেষ চতুর্থ দিনের ২৩ কিলোমিটার দূরত্বের গন্তব্য কক্সবাজার লাবনী পয়েন্ট।

এই চারদিনের হাইকিং এ তারা কিভাবে সমুদ্র বাঁচানো যায়, কিভাবে আমরা আমাদের সুন্দর সমুদ্র রক্ষা করতে পারি, কিভাবে সমুদ্রের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখা যায় এমন নানাধরণের দিকনির্দেশনা দিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে।

হাইকিং এর অভিজ্ঞতা জানিয়ে মো. আরাফাত হোসেন খান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, "মানুষকে সচেতনতা করার পাশাপাশি, দেখেছি সমুদ্র তীরবর্তী মানুষের জীবন ব্যাবস্থা, তাদের সংস্কৃতি। মানুষের দ্বারা সব সম্ভব দরকার শুধু সাহস আর ধৈর্য্য। সমুদ্র থেকে অনেক শিক্ষা নিয়ে এসেছি। শিক্ষা পেয়েছি হাইকিং এর প্রতিটা কদমে। এই শিক্ষা নিয়েই ইনশাআল্লাহ আরো বহুদূর আগাবো।" 'আমার মন বসে না শহরে ইট পাথরের নগরে,তাইতো আইলাম সাগরে,তাইতো আইলাম সাগরে!'

হাইকিং করার ব্যাপারে বি. ডি. রায়হান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, "সমুদ্রের তটে হাইকিং করা সর্বদাই অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সাগরের জেলেদের জীবনযাত্রা, খাদ্যাভাস, সংস্কৃতি ও ভাষা অনেক বেশি বিমোহিত করেছে। মানুষের জীবন কত সংগ্রামী হয়ে থাকে এই শিক্ষাই বিচ হাইকিং থেকে পেয়েছি।"

স্বপন মোড়ল বলেন, "হাইকিং এ এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা; জেলেদের জীবন যাপন, সন্ধ্যায় টেন্টের ভিতর শুয়ে সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাওয়া। এক পাশে পাহাড় আরেক পাশে সমুদ্র তার মাঝে হাটা এমন বিভিন্ন রকম মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। আমাদের হাইকিং টা খুবই ভালো ছিলো। সবশেষে সকল ভ্রমনপ্রিয় ভাই বোনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই; ভ্রমণ স্পটে ময়লা, পানির বোতল, খাবার খেয়ে কোনো প‍্যাকেট ফেলবেন না, এগুলো সাথে করে এনে তা একটা নিদিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলবেন"

আশিকুর রহমান তুরাগ বলেন, "হাইকিং এর অভিজ্ঞতাটা ছিল এবারই প্রথম। হাইকিং এর ৪ টা দিনের স্মৃতি কখনোই ভুলার মত নয়। সন্ধ্যার পর ঘুটঘুটে অন্ধকারে সমুদ্র পাড়ে আটকে যাওয়া, জেলেদের নৌকায় রাত্রিযাপনের মত অনেক এডভেঞ্চারাস ও আনন্দময় কিছু মুহুর্ত ভুলবার মত নয়।"

তোকান বাদশা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, শহরের দূষণ পরিবেশ থেকে নিজেকে একটু রক্ষার জন্য নতুন কিছু করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। যখন শুনলাম আমার বন্ধুরা সমুদ্রের পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষকে সচেতন করার জন্য বিচ হাইকিং করবে, তখন আমিও তাদের সাথে এই উদ্যোগে যোগ দেই।

ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ