Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ডিজিটাল মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী (ভিডিও)

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বার ২০১৭, ২১:১৯

 

আইটি লাইভ: হংকংভিত্তিক কোম্পানি হ্যান্সন রোবোটিক্সের তৈরি ‘সোফিয়া’কে সাথে নিয়ে দেশের তথ্য প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় মেলা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের পঞ্চম আয়োজন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা সম্পন্ন তারকা রোবট ‘সোফিয়া’র সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক দেশের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চারদিন ব্যাপী এই মেলা শুরু হয়। এই মেলার আয়োজন করেছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ।

সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প। পার্টনার হিসেবে থাকছে বাক্য, বিসিএস, ই-ক্যাব, বিআইজেএফ, বিবিআইটি, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম এবং সিটিও ফোরাম।

মেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘রেডি ফর টুমরো।’ গত নয় বছরেরও বেশি সময়ে আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশের যে অর্জন, তা নিয়ে বাংলাদেশ আগামীর জন্য প্রস্তুত বলে এ বছরের প্রতিপাদ্যে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্ধারিত বক্তৃতায় বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় এলাম তখন দেখি বিভিন্ন ফাইল টাইপরাইটারে টাইপ হয়ে আসত। সরকারি অফিসে কম্পিউটার থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার হতো না। পিসি (পার্সোনাল কম্পিউটার) ছিল ‘ডেকোরেশন পিস।’ আমি ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কম্পিউটারের ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেছি। তাদের পরামর্শ নিয়ে কম্পিউটার পার্টসসহ নানা পার্টসের ট্যাক্স কমিয়েছি। এখন সব জায়গায় কম্পিউটারের ব্যবহার হয়।

তিনি আরো বলেন, আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে এ নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছিল। জানি না মানুষ এখন কী ভাবে। তবে এটা বলতে পারি, এ দেশের মানুষ এখন ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তথ্য চুরির ভয়ে সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হয়নি। কিন্তু আমরা হয়েছি। এখন আমরা ইন্টারনেট ধারও দিচ্ছি। শিগগিরই আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী তার নির্ধারিত বক্তব্যের শেষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট সোফিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। সোফিয়া এবারের মেলার মূল আকর্ষণ। আজ দুপুর আড়াইটায় ‘টেক টক উইথ সোফিয়া’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে রোবট সোফিয়ার সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। এ অনুষ্ঠান শেষে বুধবারই সিঙ্গাপুরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে সোফিয়াকে। এদিকে চার দিনের এই প্রদর্শনী চলবে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

অনুষ্ঠান উদ্বোধনের আগে সোফিয়ার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আর শেষে তার অনুরোধেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ স্টাইলে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন এই মেলার।
আর সোফিয়াকে নাতি-পুতির সমতুল্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগেই বলেছিলাম, শুধু ছেলে মেয় না, এখন নাতি-নাতনিদের সময়। এখন বলবো, এখন নাতি পুতিদের সময়।’উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই চলে বক্তৃতা পর্ব।

এরপর মেলার প্রধান আকর্ষণ সোফিয়া আসে মঞ্চে। খ্যাতনামা হলিউড অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের চেহারার আদলে ২০১৫ সালে তৈরি করা হয় রোবট সোফিয়াকে। এই যন্ত্রমানবী প্রশ্ন শুনে তার উত্তরও দিতে পারে। গত অক্টোবরেই রোবটটিকে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। আর জিডিটাল ওয়ার্ল্ড উদ্বোধন উপলক্ষে এটিকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।

মেলার উদ্বোধনী দিনে বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে ‘সোফিয়া’ থাকবে বলে আগেই জানান হয়েছিল। মঞ্চে আসার পর সোফিয়ার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা নানা প্রশ্ন করেন এবং সোফিয়া তার জবাব দেয়।

শুরুতেই অভ্যর্থনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘‘হ্যলো সোফিয়া, হাউ আর ইউ?’। সোফিয়া জবাব দেয়, ‘হ্যালো অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার, আই এম ফাইন থ্যাংক ইউ। ইটস অ্যা স্পেশাল প্লেজার টু মিট ইউ টুডে।’

পুরোটা আলাপন চলে ইংরেজিতে। প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, তার সম্পর্কে সোফিয়া কী জানে। রোবটটি জবাব দেয়, ‘আমি আপনার সম্পর্কে কিছু জানি। আপনি মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। আপনি মাদার অব হিউম্যানিটি নামেও পরিচিত। আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা।’

প্রধানমন্ত্রীর নাতনির নাম যে সোফিয়া-এই বিষয়টিও উল্লেখ করে রোবট। এ সময় হাসির রোল পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী তখন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, জয়ের মেয়ের নাম সোফিয়া।

শেখ হাসিনা এই পর্যায়ে সোফিয়াকে বলেন, ‘তুমি তো আমার সম্পর্কে এবং আমার লক্ষ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জান। তুমি ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে কী জান?’। সোফিয়া জবাব দেয়, ‘আমি আপনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের বিষয়ে অনেক কিছু জেনেছি। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন, কার্যকর সংযোগ প্রতিষ্ঠা, তথ্য প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন এবং ই গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা।

২০০৯ সালে এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কাজ শুরু হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল অর্থনীতির প্রতিটি খাতকে ডিজিটালাইজেশন করা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করা, ২০ লাখ চাকরির সুযোগ তৈরি করা, স্বল্প সময়ের মধ্যে দক্ষতা উন্নয়ন হয়েছে, সব সরকারি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সেবা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে, এখন দেশে ২৮টি আইটি পার্ক করা হচ্ছে, এর মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি, শেখ হাসিনা সফটওয়ার পার্ক এবং অন্যগুলো।’

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭ তে উপস্থিত থাকতে পেরে গর্বিত হওয়ার কথাও জানায় সোফিয়া। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় আইটি খাতের অন্যতম বৃহৎ আয়োজন। এরপর সোফিয়া প্রধানমন্ত্রীকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ স্টাইলে’ এই মেলা উদ্বোধনের অনুরোধ করে।

 

ঢাকা, ০৬ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ