আইটি লাইভ: বর্তমান বিশ্বে অন্যতম একটি সম্ভাবনার নাম হচ্ছে রোবট। রোবটের মাধ্যমে অনেক অসম্ভব কাজকে সহজেই সম্ভব করা যায়। এর মাধ্যমে অফিসের বাইরে থেকেও অফিসে কে কী করছেন তা দেখতে পারেন অফিসের প্রধান।
আর তাই রোবট নিয়ে স্বপ্ন দেখেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক ছাত্রী রিনি ঈশান খুশবু।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র কৌশল বিভাগ থেকে ২০১৩ সালে স্নাতক সম্পন্ন করা খুশবু তার উদ্ভাবিত রোবট ‘রিরা’ দিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরুণ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের জন্য কানেকটিং স্টার্টআপ বাংলাদেশ-এর শীর্ষ ৫০ জনের একজন নির্বাচিত হন।
তিনি স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ থেকে বিশ্বমানের রোবট রপ্তানি করার।শুধু স্বপ্ন দেখা নয় ২০১৭ সালেই সরকারের আইসিটি বিভাগ থেকে আইসিটি ইনোভেশন গ্র্যান্ট-এর আওতায় হিউম্যানয়েড রোবট রপ্তানির চেষ্টা করছেন তিনি। রাকিব রেজার সাথে তিনি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্ল্যানেটার লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই রোবটের দুনিয়ায় বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রত্যয়ী হন তারা।
খুশবু জানান, কয়েকটি দেশে এ ধরনের রোবট ব্যবহূত হচ্ছে। এর মাধ্যমে অফিসের বাইরে থেকেও অফিসে কে কী করছেন তা দেখতে পারেন অফিসের প্রধান। এছাড়া চিকিত্সকরা অন্য স্থানে থেকেও রোগীকে পরামর্শ দিতে পারেন, কর্মজীবী মায়েরা অফিসে বসে ঘরে সন্তানদের দেখে রাখতে পারবেন। টেলিপ্রেজেন্স রোবটকে এমন আরো অনেক কাজে লাগানো যেতে পারে বলে জানান তিনি।
তাদের উদ্ভাবিত আরেকটি রোবটের নাম হচ্ছে ‘মানবগাড়ি’ রোবট। এটি এমন এক রোবট যেটা নিজেই নিজের আকার পরিবর্তন করতে পারে। যেমন এক সময় হয়ত সে মানুষ, তারপর নিজ থেকেই সে গাড়িতে রূপ নিতে পারে। শুধু গাড়ি নয়, অন্য কোনো রূপেও তাকে দেখা যেতে পারে। গোয়েন্দারা এই রোবট ব্যবহার করতে পারে বলে জানান খুশবু। ‘মানবগাড়ি’ নামটা খুশবুদের দেয়া। এর টেকনিক্যাল নাম ‘সেলফ রিকনফিগারেবল ট্রান্সফরমার রোবট।’ ‘মানবগাড়ি রোবটকে’ আরো উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। খুশবু জানান, কানেকটিং স্টার্টআপ বাংলাদেশ- এর ২৫ জন নির্বাচিত হন তাদের আইডিয়া দিয়ে আর বাকি ২৫ জন তাদের উদ্ভাবিত পণ্য দিয়ে।
খুশবু আরো জানান, রোবটের প্রতি আগ্রহ তার ছোটবেলা থেকে। সে সময় ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন পড়তে তার খুবই ভাল লাগতো। এছাড়া সায়েন্স ফিকশনধর্মী ছবিও তিনি প্রচুর দেখতেন। সেই থেকে রোবটের প্রতি তার ভালবাসা ও রোবট বানানোর স্বপ্ন দেখা শুরু। তিনি আরো বলেন, মেয়েদের আসলে যন্ত্রভীতি থাকে না সমাজই ভাবে মেয়েরা চিকিত্সার মতো সেবামূলক পেশায় আসবে। কিন্তু যখন কোনো মেয়ে যন্ত্র নিয়ে কাজ করতে আসে তখন সে ভাল করে এমন প্রমাণও আছে। দেশে নারী প্রকৌশলীর সংখ্যা শুধু বাড়ছে না তারা ভাল করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ করার লক্ষ্যে সরকার গবেষণার সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছে এতে ক্ষেত্রটা প্রসারিত হচ্ছে। আবার যারা আইটি সেক্টরে প্রবেশ করছে তাদের উপর সরকার ভরসা করতে পারছে না। তাই সরকারের বড় বড় কাজ বিদেশিদের কাছে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা, ০৭ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: