লাইভ প্রতিবেদক: ভিন্ন এক স্বপ্ন দেখালেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বললেন, নতুন এক বাংলাদেশ জেগে উঠবে। মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে তাবত দুনিয়ায়। পাখা মেলে উড়বে আমাদের দুরন্ত দুর্বার দামাল তরুণ ও যুবারা। শুক্রবার খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে দক্ষ করে তুলতে আগামী তিন বছরে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে আরও ১৫ হাজার কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন।
ভবিষ্যতে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষদের দেশে কর্মসংস্থানের জন্য ২৮টি আইটি পার্ক করা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পলক বলেন, “তোমরা যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করবে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে, তখন যেন দেশের মাটিতে বসেই মেধার স্বাক্ষর রাখতে পার, সারা বিশ্ব জয় করতে পার সেজন্য আইটি পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এসব আইটি পার্কে আগামী ১০ বছরে ২০ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে।”
কিশোর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি স্কুল ও কলেজে কম্পিউটার ল্যাব করা হবে। ইতোমধ্যে শেখ রাসেল কম্পিউটার কাম ল্যাংগুয়েজ ল্যাব স্থাপন করেছি। এর সংখ্যা দুই হাজার একটি । আমাদের পরিকল্পনা আগামী তিন বছরে নতুন করে আরও ১৫ হাজার ল্যাব স্কুল ও কলেজে স্থাপন করব।
বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চার কোটি ৫৭ লাখ শিক্ষার্থী থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের কম্পিউটার শিক্ষায় যোগ্য করে গড়ে তুলব, তাদের উদ্ভাবনীগুলোকে উৎসাহিত করব।”
পলক বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা স্টার্স্টআপ বাংলাদেশ শুরু করেছি, সে ব্যানারে ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমি করেছি, যে কোন প্রান্তে উদ্ভাবনী কোনো ধারণা যদি থাকে তাহলে এটি নিয়ে আসলে একাডেমি থেকে ডেভেলপ করব।”
আগামীতে দুই হাজার একটি শেখ রাসেল কম্পিউটার কাম ল্যাংগুয়েজ ল্যাবে একই সাথে অনলাইনে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করার পরিকল্পনার রয়েছে জানিয়ে পলক বলেন, “এর মাধ্যমে সারা বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রোগ্রামিং ও কুইজ প্রতিযোগিতায় দুই ক্যাটাগরিতে মোট ১১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
সমাপনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। এ সময় তিনি আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে কুইজে ১২০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় এবং প্রোগ্রামিংয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ৪৭ জনকে।
চলতি বছর সারা দেশকে মোট ৮টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়। অঞ্চগুলো হলো: রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিভাগ (গোপালগঞ্জ)।
অনুষ্ঠানের সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) ও ধাঁনসিড়ি কমিউনিকেশন এবং একাডেমিক সহযোগিতায় কোডমার্শাল ও দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল।
সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ‘আজকের এই হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নতুন এক বাংলাদেশের সূচনা হলো। আমরা জানি আমাদের ছেলে-মেয়েরা অনেক মেধাবী। তাদের শুধু এই ধরনের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারলেই হবে। তাহলে একদিন আমাদের ছেলে মেয়েরাই গুগল, ফেসবুক তৈরি করতে পারবে।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আইসিটির অতিরিক্ত সচিব মো হারুনুর রশিদ, ডি এস মাহবুব পান্না প্রমুখ ।
ঢাকা, ০৭ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: