ডেস্ক লাইভ: একটি চেয়ার নিয়ে তোলপাড় চলছে। সারা দুনিয়ায় এখন আলোচনার বিষয় হিসেবে আসছে সেই চেয়ারের নাম। তবে সেই চেয়ারটির মালিক কে, কি মহাত্ম রয়েছে সেই চেয়ারে, কি জাদু রয়েছে তাতে, নাকি মেধা আর প্রযুক্তির ছোয়া আছে? এনিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা। বলছি পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ব্যবহৃত হুইলচেয়ারটির বিষয়ে।
বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীর ব্যবহৃত হুইলচেয়ারটি প্রায় তিন কোটি ৩০ লাখ টাকায় এবং তাঁর পিএইচডি ডিগ্রির গবেষণাপত্রের পাণ্ডুলিপি সাড়ে ছয় কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এমনটি জানাগেছে পারিবারিক সূত্রে।
সংশ্লিস্টরা জানায়, বৃহস্পতিবার নিলামের মাধ্যমে ওঠা এমন দামে বিক্রির কথা জানিয়েছে নিলামকারী কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এপি ও ইউএনবি এ তথ্য দিয়েছে। এ ব্যাপারে আরও অজানা অনেক তথ্য এখনও জানা যায়নি।
তিনি ওই চেয়ারে বসেই বিভিন্ন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখতেন। সভা ও সেমিনারেও তার কল্পনার কথাগুলো ভয়েস আকারে তার কথামালা বোর্ডের মনিটরে ভেসে উঠতো।
পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি প্যারালাইজড হয়ে যান। পরে যে মোটরচালিত হুইলচেয়ারে রাখা হয়েছিল সেই চেয়ার নিলামে উঠে। অনলাইনভিত্তিক এই নিলামে তার দাম ওঠে দুই লাখ ৯৬ হাজার ৭৫০ পাউন্ড, যার ভিত্তিমূল্য রাখা হয়েছিল ১৫ হাজার পাউন্ড।
তার চেয়ার বিক্রীত এই অর্থ দুটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে, যার একটি স্টিফেন হকিং ফাউন্ডেশন এবং অন্যটি মোটর নিউরন ডিজিসেস অ্যাসোসিয়েশনে।
অন্যদিকে, বিশ্বখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৫ সালে করা ‘প্রপার্টিজ অব এক্সপেন্ডিং ইউনিভার্স’ শিরোনামের থিসিস পেপারটি তার ভিত্তিমূল্যের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। অনলাইন নিলামে এর দাম উঠেছে পাঁচ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫০ পাউন্ড।
গেল ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই নিলামে সব মিলিয়ে স্টিফেন হকিংয়ের ২২টি সামগ্রী তোলা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘সিম্পসন’ (এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম বইটির একটি পরিচ্ছেদ), সাড়াজাগানো গবেষণাপত্র ‘স্পেকট্রাম অব ওয়ার্মহোলস’ ও ‘ফান্ডামেন্টাল ব্রেকডাউন অব ফিজিকস ইন গ্র্যাভিটেশনাল কোলাপ্স’-এর পাণ্ডুলিপি।
নিলাম আয়োজক কর্তৃপক্ষ বলছে, নিজের হাতে লেখা হকিংয়ের গবেষণাপত্র যেমন বিজ্ঞানের জ্বলন্ত দলিল, তেমনি এগুলো তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের গল্পও বলে।
চলতি বছরের মার্চে ৭৬ বছর বয়সে মারা যান স্টিফেন হকিং। মহাকাশের রহস্য, কৃষ্ণগহ্বর, সৃষ্টির রহস্যের সন্ধানের জন্য বিশ্বে পরিচিতি পান হকিং।
মাত্র ২২ বছর বয়সে মস্তিষ্কের জটিল রোগ মোটর নিউরন ডিজিসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হুইলচেয়ারে বন্দি ছিলেন হকিং। সে অবস্থাতেই মহাকাশের রহস্যের সমাধানে ব্যস্ত থেকেছেন তিনি। তার তুলনা নেই। তিনি ছিলেন অতুলনীয় মানুষ।
ভিডিও:
ঢাকা, ০৯ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: