আবদুল্লাহ আল মামুন : প্রথম থেকেই stulish এর বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে। মনের যত জমানো কথা প্রিয়জনকে জানানো, কারো সংশোধনের জন্য গঠনমূলক সমালোচনা বা কষ্টের বিষয়গুলো নির্দিষ্ট ব্যক্তির নজরে আনার জন্য অনেকের প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সম্পর্কের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্থ হওয়ার ভয়ে তারা চুপসে থাকেন। Stulish তাদের জন্য সুন্দর একটি সুযোগ নিয়ে এসেছে, যেখানে প্রিয়জনকে ভালো লাগা বা মন্দ লাগার বিষয়টি জানানোও হলো আবার পরিচয়ও গোপন থাকার ফলে সম্পর্কও অটুট থাকলো।
তবে কিছু সুবিধা থাকলেও থার্ড-পার্টি এপস হওয়ায় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা এবং সাইবার অপরাধের আশংকা থেকেই যাচ্ছে। এই এপস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী কী ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, সেগুলো নিয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যালোচনা নিচে তুলে ধরছি।
সাইবার বুলিং -
অপরাধ করা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। তবে অধিকাংশ মানুষ নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক পদমর্যাদাসহ বিভিন্ন কারণে নিজের এই প্রবৃত্তিকে সংযত রাখলেও, সুযোগ পেলে সুপ্ত এই প্রবৃত্তি ভয়ংকরভাবে জেগে উঠে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে নারীরা বিশেষত টিনেজ ও মধ্যবয়সী নারীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন। আর এই ঘটনাগুলো যারা ঘটিয়ে থাকে তাদের ট্র্যাক করা সম্ভব। এটি জেনেও অপরাধীরা অনলাইনে নারীদের মানসিক ও যৌন নির্যাতন করে। এবং এই ধরণের ঘটনা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
Stulish -এর মতো এপসগুলোতে যারা ফিডব্যাক দেয় তাদের পরিচয় গোপন রাখে এপসটি। ফলে টার্গেট করে কোনো নারীকে বাজে ফিডব্যাক দেয়া বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এমন আচরণ করা খুবই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে যদিও প্রেরণকারীর পরিচয় গোপন থাকে, তবু প্রাপক মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনাই বেশি।
শুধু নারীরাই সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন তা নয়। অনেক পুরুষও এধরণের ঘটনার শিকার হয়েছেন। উদ্দেশ্যমূলক ও বাজে টেক্সট দ্বারা ফিডব্যাক পাচ্ছেন অনেকে। এতে করে তারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আবার অনেকে সেগুলো শেয়ার করে কটু ভাষার প্রয়োগে রিপ্লে দিচ্ছেন। মূলত তার জানাই নেই কে ফিডব্যাকটি দিয়েছে এবং তিনি কার উদ্দেশ্যে রিপ্লে দিচ্ছেন সেটিও অজানা। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে তার সাথে সংযুক্ত বন্ধুরা তাদের আচরণ ও প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যেমন অস্বস্তি বোধ করছেন, তেমনি সামাজিকমাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়টিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
নিরাপত্তা-
বেশকিছু দিন ধরে থার্ড-পার্টি এপস ব্যবহার করে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ফেসবুক অথরিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার ঘোষণাও দিয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু এব্যাপারে ব্যবহারকারীদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে।
Stulish ব্যবহার করার জন্য ইউজারকে ফেসবুকে ব্যবহৃত ইমেইল আইডি ও ফ্রেন্ডলিস্টসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্যে একসেস করার অনুমতি দিতে হয়। এই তথ্যগুলো এপস কর্তৃপক্ষ কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থা বা তৃতীয় কোনো পক্ষের নিকট হস্তান্তর করতে পারে। ফলে ব্যবহারকারী নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এ যেকোনো কন্টেন্ট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সুবিধার পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
আবদুল্লাহ আল মামুন (সীমান্ত)
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত (৩৬তম বিসিএস)
[বি:দ্র: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে স্টুলিশ অ্যাপ। ওই অ্যাপের মাধ্যমে উড়ো চিঠি নিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে সাদা পায়রা। আপনার মনের কথা মনের মানুষকে জানানোর এটি একটি পন্থা। ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, কিংবা ইন্সটাগ্রামে স্টোরি হয়ে আপনার মনের কথা জানান দিচ্ছে এই বার্তাবাহক]
ঢাকা, ২৫ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: