আইটি লাইভ: বাংলাদেশের আইসিটি প্রকৌশলীদের জন্য ক্যাডার সার্ভিস চালু করা হবে। ‘সেদিন আর বেশি দূরে নেই যখন আইসিটি ক্যাডার সার্ভিস চালু হবে।’ বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের প্রকৌশলীদের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেয়েছিলেন তা বাস্তবায়নের পথে। ইতোমধ্যেই স্বপ্ন অনেকটা বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। বাকিটুকু বাস্তবায়নে আমাদের প্রকৌশলীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য আইসিটি ক্যাডার সার্ভিস চালু করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। এটা সুন্দর ও শুভ উদ্যোগ।’
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর মিলনায়তনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রোগ্রেস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে কী-নোট স্পিকার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম এর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে মন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের জন্য আইসিটি ক্যাডার সার্ভিস চালু করার আবেদন জানালে তিনি প্রস্তাবের সাধুবাদ জানান এবং চালু করার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশের অভিভাবকদের প্রতি অনেকটা আক্ষেপ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য এ নিয়ে যে, আমরা আমাদের সন্তানদের উপর আস্থা রাখতে পারি না। যদি রাখতে পারতাম তাহলে আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেকেই শিশুদেরকে মোবাইল ফোন ধরতে দেই না। তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবে আমরা তাদের মেধাকে অবমূল্যায়ন করছি। আমি বলি তারা নষ্ট হবে না। আরো বিকশিত হবে। আপনি শুধু তাদেরকে মোবাইলটা হাতে দেয়ার আগে ইন্টারনেট সঠিক ব্যবহারের পদ্ধতিটা শিখিয়ে দিন। স্বচ্ছ ধারণা দিন। গেম খেলতে দিন। তাদের মেধাকে সঠিক ব্যবহারের সুযোগ দিন। দেখবেন তারা কত উদ্ভাবনী কাজ আমাদের উপহার দিচ্ছে।’
এখন বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উদাহরণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বারাক ওবামা ক্যানিয়ার জনগণকে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার কথা বলেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলতে গিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশকে অনুসরণ করার কথা বলেন।’
মন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি হয়েছে। এর কারণ ওই ব্যাংকের সফটওয়্যারটা তৈরি করেছে বিদেশিরা। চুরি তো বিদেশিরাই করবে। আজ আমাদের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা এটা বানালে হয়তো চুরিটা হতো না।’
সেমিনারে বক্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের নানামুখী উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। তাঁরা বলেন, ‘১০ বছর আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ একটা স্বপ্ন ছিল। এখন তা বাস্তব। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নানান ধরণের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।’
এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ‘আমাদের দেশে আইটি সেক্টরে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্টের অভাব রয়েছে। এটি ডেভেলপ করতে হবে। হিউম্যান রিসোর্চ ডেভেলপমেন্টও পর্যাপ্ত নেই। এ সেক্টর বাড়াতে হবে। স্মার্ট সার্ভিস বৃদ্ধি করতে হবে। সারাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির ব্যবস্থা করতে হবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমাতে হবে।’
আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইঞ্জিনিয়ার এমএম সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন টেলিটকের জেনারেল ম্যানেজার ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাব উদ্দিন, আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর প্রমুখ।
ঢাকা, ০৫ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: