আইটি লাইভ: ওবামা প্রশাসনের সময়ে পাশ হয়েছিল নেট নিউট্রালিটি আইন। ফলে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উপর ছিলনা কোন ব্যবহার বিধি। বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন ইন্টারনেট ব্যবহারবারীদের উপর নজরদারি বাড়াতে নেট নিউট্রালিটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ডাটা ইউজ বা ভিজিটের উপর একটা প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘নেট নিউট্রালিটি’ বা নেট নিরপেক্ষতা খারিজ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন ফেডেরাল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) ভোটে খারিজ হয়ে গেল এই নেট নিউট্রালিটি।
কমিশনের ৫ সদস্যের মধ্যে তিন রিপাবলিকান সদস্য আইন বাতিলের পক্ষে ভোট দেন, আর দুই ডেমোক্র্যাট ভোট দেন বাতিলের বিপক্ষে। ৩-২ ভোটে জয়ী হয় ‘নেট নিউট্রালিটি’ বা ইন্টারনেটের স্বাধীনতার বিপক্ষের গ্রুপ।
এই আইনে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের কোনো নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করার চেষ্টাকে বাধা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে কোনো ওয়েবসাইট খোলার জন্য টাকা দাবি করার পথও আটকানো হয়। পাশাপাশি সব ওয়েবসাইট একই গতিতে খুলবে বলে নিশ্চিত করা হয়।
নেট নিউট্রালিটি বাতিলের পেছনে রয়েছে আইএসপি কোম্পানিগুলো। আর প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়ে কাজ করেছেন এফসিসি’র চেয়ারম্যান অজিত পাই। ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই মার্কিন নাগরিক দীর্ঘদিন ধরে নেট নিউট্রালিটির বিপক্ষে রয়েছেন।
‘নেট নিউট্রালিটি’ কথার মূল অর্থ হলো, ইন্টারনেটে সবার সমান অধিকার থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি কোনো সার্ভিস প্রোভাইডরের কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে ডাটা কিনলেন, এখন সেই ডাটা আপনি কীভাবে খরচ করবেন, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।
আপনি আপনার পছন্দমতো যেকোনো ওয়েবসাইট খুলতে পারবেন। ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী কোনো ওয়েবসাইটের প্রতি পক্ষপাতমূলক বা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করতে পারবে না।
এমআইটি’র একজন সিনিয়র গবেষক বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু লিপম্যান বলেন, ‘সারা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ বিশেষ করে উন্নত দেশগুলি নেট নিরপেক্ষতা বাতিলের সুবিধা নিবে। আমাদের উদ্বেগের কারণ বিশ্বের উদীয়মান বাজারগুলো নিয়ে, যেখানে ইন্টারনেটের কয়েকটি বিকল্প থাকতে পারে এবং সরকার কর্পোরেশনের স্বার্থের পক্ষ নিতে হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, যেসব দেশে বেশিরভাগ নাগরিকের জন্য ইন্টারনেট ডাটা প্ল্যান খুবই ব্যয়বহুল সেখানে বিতর্কিত ‘জিরো রেটিং’ পরিষেবাগুলির জন্য যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠবে।
এদিকে নেট নিউট্রালিটির দাবি খারিজ হওয়ায় বিশ্বজুড়ে সাইবার দুনিয়ায় বিশাল প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ‘প্রভাব যে কিছুটা পড়বে, এটা নিশ্চিত।’ উদাহরণ হিসেবে অদূর ভবিষ্যতে কোনো মার্কিন ওয়েবসাইট খুলতে গেলে বহির্বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে টাকা দিতে হবে গ্রাহককে।
পরিশেষে বলা যায়, যদি নেট নিউট্রালিটি না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট স্পন্সর কনটেন্ট দিয়ে ভরে যাবে। অন্যায্য এক খেলার মাঠে নামিয়ে দেওয়া হবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। আপনি যতই ইউনিক আইডিয়া নিয়ে কাজ করুণ না কেন, আপনার যদি যথেষ্ট টাকা না থাকে সার্ভিস প্রভাইডারদের দেওয়ার মতো তাহলে কখনোই সফল হওয়া যাবে না। ছোট ব্যবসাগুলো কখনোয় দাঁড়াতে পারবে না। পক্ষান্তরে আরও সেবা খারাপ হওয়া স্বত্তেও টাকার জোরে ইন্টারনেটে সেটা ভাইরাল হয়ে যাবে।
ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: