Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

খাদিজার রক্তে ভেজা সেই ইমরান অঝোরে কেঁদেছেন

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবার ২০১৬, ০৮:৫৬

শাবি লাইভ : এমসি কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের নৃশংসতায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তবে খাদিজার রক্তে ভেজা সেই ছাত্র ইমরানের বদান্যতা রয়ে গেছে আড়ালে। সেই ছেলেটি প্রথম ছুটে গিয়েছিলেন খাদিজাকে উদ্ধার করতে। এসময় রক্তে ভিজে যায় তার শরীর। শুধু তাই নয় হাসপাতালে নিয়ে নিজের রক্ত দিয়ে খাদিজাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেছেন তিনি। এসময় চোখের জলে ভেসেছেন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকটা হতভম্ভ সেই ছেলেটির সঙ্গে কথা হয়েছে ক্যাম্পাসলাইভের সঙ্গে।

সিলেটের এই ছেলেটি সবেমাত্র এইচএসসি পাশ করেছেন। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন।  সোমবার তিনি ঘুরতে গিয়েছিলেন এমসি কলেজে। সঙ্গে তার কয়েকজন বন্ধুও ছিল।

হঠাৎ তিনি দেখলেন ক্যাম্পাসের সবাই দৌড়াচ্ছে। রক্তাক্ত একটি মেয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না।

ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি অনেকটা হতভম্ব হয়ে পড়েন। এভাবে মানুষ মানুষকে কোপাতে পারে!!! সম্ভিত ফিরে পেয়ে যখন তিনি এগিয়ে গেলেন তখন অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। বন্ধুদের নিয়ে ধরাধরি করে ওই ছাত্রীকে নিয়ে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেন তিনি।

সেখানে দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটি করেছেন তিনি। ওই ছাত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে অঝোর ধারায় কেঁদেছেন তিনি। তবে অপরিচিত ওই মেয়েটির জন্য কেন তিনি কেঁদেছিলেন তার উত্তর তার জানা নেই। মেয়েটিকে বাঁচানোর জন্য নিজের শরীরের এক ব্যাগ রক্তও দিয়েছেন ইমরান। তবুও বদরুলেন নৃশংসতা ইমরানের ওই বদান্যতাকে ম্লান করে দিয়েছে।

ইমরান বলেন, আমি তখন অনেকটা দূরেই ছিলাম। যখন দেখলাম সবাই হই চই করতেছে তো তখন বিষয়টা বোঝার জন্য একটু আস্তে আস্তে আগাইতেছিলাম।

আশপাশে কেউ নেই, সবাই দৌড়াইতেছে। তখন আমি দৌড়ে কাছে গিয়ে দেখলাম ওই আপুর (খাদিজা) কপালে, মাথায়, গায়ে অনেকগুলো কোপের দাগ। তিনি তখন চোখ খুলছেন আর বন্ধ করছেন; হাত-পা নিজের দিকে টেনে নিচ্ছিলেন। আমি গিয়ে তুললাম আপুটাকে। কিন্তু একা কিছুই করতে পারছিলাম না। জোরে জোরে ডাকতে লাগলাম, 'প্লিজ আপনারা কেউ একজন আমার সঙ্গে আসেন। কিন্তু ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে চাচ্ছিলেন না। পরে এগিয়ে আসলেন একজন এবং এরপর আসলেন আরো একজন। তিনজনে মিলে ওনাকে তুলে নিয়ে গেলাম এমসি কলেজের গেটে। সেখান থেকে সিএনজি করে নিয়ে যাই হাসপাতালে।'

ইমরানের রক্তমাখা ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনেকেই তার পরিচয় ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। কেউ বলেছেন তিনি নাকি শাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা। আবার কেউ বলছেন এমসি কলেজের ছাত্র সে। প্রকৃত সত হল ইমরান এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের যে নৃশংসতা তিনি দেখেছেন তাতে নিজের জীবনের কোন প্রভাব ফেলতে নিশ্চই তিনি চাইবেন না।

উল্লেখ্য, শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম গত সোমবার বিকেলে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে খাদিজা আকতার নার্গিস নামে এক ছাত্রীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। খাদিজা বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

ঢাকা, ০৬ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ