Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ফ্রিল্যান্সিং করে ববি শিক্ষার্থীর আয় অর্ধ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২, ০২:১৪

মো. নাঈম হোসেন

ববি লাইভ: বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে যাচ্ছে। অনেকেই আইসিটি নির্ভর ক্যারিয়ার গঠনের চেষ্টা করছেন। তেমনি এক সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠছেন বরিশালের মো. নাঈম হোসেন। মাত্র ২৮ বছরের জীবনে কোটি টাকা আয় করছে এর মাধ্যমে। ফ্রিল্যান্সিং করে বোনদের বিয়ে দিয়ে ও পরিবারকেও সচ্ছল করেছে এই যুবক।

নাঈম হোসেন ঝালকাঠি জেলার বাসিন্দা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।

ক্যাম্পাসলাইভের সাথে আলাপকালে নাঈম বলেন, অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করি। ২০১৬ সালে কাজ শুরুর প্রথম মাসে আমি আয় করেছিলাম প্রায় ৬ হাজার টাকা। এটা তখন আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া ছিলো। কারণ আমি ভেবেছিলাম অনলাইনে কাজ করতে হবে। প্রথমে এই ভেবে ভয় হচ্ছিল যে, আমার ক্লাইন্ট থাকে বাইরের দেশের। কাজ করার পর টাকা দিবে কিনা। কাজ শেষ করার পর যখন হাতে টাকা পেলাম তখন বুঝলাম না আসলে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা সম্ভব। প্রথম বছরেই প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা আয় করি।

তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সময় লক্ষ্য করতাম বিকেল হলে সবাই বিসিএস কোচিংয়ে দৌড়ায়। আবার কেউ সরকারি চাকরির পেছনে দৌড়াচ্ছে। তখন আমি ভাবলাম ‘সবাই যদি চাকরি করি, তাহলে চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে কে?’ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর আমার চায়নাতে স্কলারশিপ হয়। কিন্তু আমি পরিবারের বড় ছেলে তাই পরিবার আর বিদেশে পাড়ি জমাতে দিলো না। তাই তখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর ছয়মাসের একটি কোর্স করি। আপওয়ার্কে নিজের নামে একটি একাউন্ট খুলি। ওই কোর্স শেষে আমি একটা প্রোজেক্ট পাই। ওই প্রোজেক্টের জন্য আমাকে ১০ ডলার দেয়। ওই প্রোজেক্ট শেষ করার কয়েক সপ্তাহ পরই আরেকটি প্রোজেক্ট পাই যার জন্য আমাকে ৫০ ডলার দেয়। ২০১৭ সালের আমার এমবিএ শুরু হয়ে যায়। এমবিএ শুরু হওয়ার পর আর কোনো কাজ পাচ্ছিলাম না।

কার্তিক নামে একটা ছেলে আমার সঙ্গে কোর্স শিখেছিল। ওর সঙ্গে একদিন যোগাযোগ করে জানতে পারলাম যে ও কোনো কাজ পাচ্ছে না। ও ইংলিশ বেশি দক্ষ ছিলো না তাই ক্লাইন্টদের ঠিকমতো ডিল করতে পারতো না। তাই কাজ পেত না। তখন আমি বললাম আমার সঙ্গে চাইলে তুমি কাজ করতে পারো। আমি যা খাই, তুমিও তাই খাবে। যেখানে থাকি তুমিও সেখানেই থাকবে। আমার এই কথায় ও রাজি হয়ে গেল। আমি শহরে একাট রুম নিয়ে থাকতাম কার্তিককে আমি এখানে নিয়ে আসি।

তখন কোনো কাজ পাচ্ছিলাম না। কাজ ছিলো না, হাতে টাকাও ছিলো না। একবেলা খেতাম। এভাবে করে প্রায় ২-৩ মাস চলে যায়। রোজার মাস চলে আসলো। ও রাতে খেয়ে ঘুমাতো আর আমি সেহরি খেয়ে ঘুমাতাম। সন্ধ্যা বেলায় মসজিদে ইফতার করতাম। ঈদের ছুটিতে সবাই বাসায় চলে যাবে। কার্তিক আর আমিও ঈদের ছুটিতে বাড়ি চলে যাই। আমি ঠিক করি বাড়িতে গিয়েও অনলাইনে থাকবো। কারণ ঐ সময় ফ্রিল্যান্সারদের পাওয়া যাবে না। এই সুযোগটাকে আমি কাজে লাগালাম। তো যেমন পরিকল্পনা, তেমন কাজ করালাম। ঈদের ঠিক একদিন আগে ১২০ ডলারের একটি প্রোজেক্ট পাই। প্রোজেক্ট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্তিককে ফোন দেই বরিশালে চলে আসার জন্য। ঈদের দিন বিকেলে দুজনেই বরিশালে চলে আসি। পরবর্তীতে ওই একই কোম্পানি আমাকে ১২০ ডলারের প্রোজেক্ট দেয়। আমি ২০১৭ সালে প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা আয় করে ফেলি। ২০১৮ সালে আমার এমবিএ শেষ হয়ে যায়। এই যে আমি উপরে উঠতে শুরু করলাম, এরপর আমাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।

নাঈম প্রশিক্ষণ সেন্টার ‘নিকেট’ ২০১৯ সালে গড়ে তুলেছেন। ২০১৯ সালে থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০টি ব্যাজ প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হয়েছে। যারা ফ্রিল্যান্সিং করে বর্তমানে প্রতি মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেছেন।

ফ্রিল্যান্সার ও তরুণ উদ্যোক্তা নাঈম সমাজের শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জনের বিভিন্ন কোর্স করে আয় করার আহ্বান জানান। অনলাইনে কাজের অভাব নেই। দক্ষ কাজের লোকের অভাব রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখানো হয় বলেও জানান তিনি।

ঢাকা, ২৯ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজে//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ