Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

অনিল যেভাবে ৩৯৯ কোটি টাকার মালিক

প্রকাশিত: ২৭ আগষ্ট ২০১৮, ০০:৫৮

লাইভ ডেস্ক: অনিল। খুবই পরিশ্রমী। চৌকস। সাহসীও বটে। জীবনের স্বপ্নটা শেষমেষ ঠিকই হলো। তার কাজ আর মেধাকেও তিনি ঠিক জায়গাতে খাটাতে পরেছেন। একসময় চা বিক্রি করতেন। এখন তিনি ৩৯৯ কোটি টাকার মালিক।

গল্পের মতো শোনালেও ঘটনা সত্যি। তার নাম অনিল কুমার। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচনে বোম্মানহলি কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। সেখানে নিজের সম্পত্তির হিসেব দিতে গিয়েই এমনভাবে চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে।

জানাগেছে, অনিল কুমার জন্মসূত্রে কেরালার। খুব কম বয়সে বাবাকে হারান। মা বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করতেন। বিনিময়ে পেতেন চারটি করে ইডলি। সেগুলো নিয়ে আসতেন ছেলের জন্য। পড়াশোনা বেশি দূর করা হয়নি অনিল কুমারের।

মাত্র ১১ বছর বয়সে চলে আসেন বেঙ্গালুরুতে। রাতে বন্ধ দোকানের সামনেই ঘুমিয়ে পড়তেন। পরে আম বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ পেয়েছিলেন। বিনিময়ে পেতেন খাবার।
এভাবেই কিছু টাকা-পয়সা জমিয়ে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান করেছিলেন তিনি।

ধীরে ধীরে তার ব্যবসা বাড়তে থাকে। চায়ের দোকান থেকে ভালোই আয় হতে থাকে। এসময় বিয়ে করেন। এরপর বাড়ি করার জন্য ছোট একটু জায়গাও কেনেন।

কিন্তু কিছুদিন পর সেই জমি দ্বিগুণ দামে কিনে নেন অন্য একজন। এতেই তার ভাগ্য খুলে যায়। সেই পুঁজি দিয়ে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা শুরু করেন। কম দামে ছোট ছোট জমি কিনে বিক্রি করতে থাকেন বেশি দামে।

২০১০ সালে এমজে ইনফ্রাস্ট্রাকচার নামে খোলেন নিজের প্রতিষ্ঠান। তারপর থেকেই তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। শুধু কোটি কোটি টাকাই নয়, তার রয়েছে ১৬টি গাড়ি। রয়েছে আরও অনেক সম্পদ।

অনিল কুমার কর্ণাটক বিধানসভায় নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছেন বোমমানাহল্লি আসন থেকে। আগামী ১২ মে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে তিনি ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনী হলফনামায় নিজের সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ৩৩৯ কোটি রুপি। পাশাপাশি তাঁর গাড়ির সংখ্যা ১৬ বলে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে কয়েকটি আছে বিদেশ থেকে আমদানি করা।

অনিল কুমারের মূল বাড়ি ভারতের কেরালা রাজ্যে। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে তিনি চরম দুর্দশায় পড়েন। তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে তাঁর মা গৃহকর্মীর কাজ করেছেন। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অনিল কুমার বলেন, ‘আমার মা মানুষের বাড়িতে থালা-বাসন ধুয়েছেন।

মেঝে মুছতেন। এর বিনিময়ে তিনি কিছু খাবার পেতেন। কিন্তু তিনি আমাদের না খাইয়ে নিজে খেতেন না।’ এনডিটিভির খবরে বলা হয়—অনিল এ স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

দারিদ্র্যের কারণে অনিল কুমার তৃতীয় শ্রেণির বেশি পড়তে পারেননি। উপার্জনের উদ্দেশে ১৯৮৫ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন। অনিল কুমার বলেন, বেঙ্গালুরু ছিল তাঁর কাছে একদম নতুন শহর। সেখানে তিনি রাতে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সামনের খোলা রাস্তায় ঘুমাতেন।

একপর্যায়ে এক ব্যক্তি তাঁকে দোকানে কাজ দেন। তাঁর কাজ ছিল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কার্টনভর্তি আম পৌঁছে দেওয়া। অনিল বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আমের কাজটি ছেড়ে দেন এবং একটি ছোট্ট কোম্পানিতে চা বিক্রি শুরু করলেন।

১৯৯০ সালে তিনি একটি আইটি ফার্মে চা বিক্রি করেন। ওই ফার্মের আওতায় বড় একটি শোরুমও ছিল। অনিল বলেন, সেখানে তিনি প্রচুর চা বিক্রি করতে পারতেন। কারণ সেখানে অনেক লোকের সমাগম হতো। তিনি উপার্জিত অর্থের একটা অংশ সঞ্চয় করতে থাকেন।
অনিল বলেন, ভাগ্যের চাকা চূড়ান্তরূপে ঘুরতে থাকে তাঁর বিয়ের পর।

বিয়ের পর এই দম্পতি বাড়ি করার জন্য একখণ্ড জমি কেনেন। কিন্তু জমি কেনার পরপরই কিছু লোক তাঁর জমিটি কেনা দামের দ্বিগুণ দামে কিনতে চায়। তিনি তা-ই করেন। জমিটি তাদের কাছে দ্বিগুণ লাভে বিক্রি করে দেন। অনিল কুমার বলেন, ‘এটিই আমাকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

এরপর থেকে (নব্বই দশকের শেষের দিকে) আমি একের পর এক জমি কেনাবেচা করতে লাগলাম। এই রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়ই আমাকে ছয় বছরের মাথায় কোটিপতি করে।’
অনিল আট বছর আগে বোমমানাহল্লিতে এম জে ইনফ্রাস্ট্রাকচার নামের একটি কোম্পানি খোলেন।

অনিল কুমার নিজের উপার্জিত অর্থের একটি অংশ মানবকল্যাণে ব্যয়ের পাশাপাশি গির্জা ও মন্দির স্থাপনার মতো কাজে খরচ করছেন বলে জানান।

অনিল যে আসনটিতে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, তা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী জি সতীশ রেড্ডির দখলে। তবে নির্বাচনে জয়ী হবেন বলে আত্মবিশ্বাসী অনিল। সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

 


ঢাকা, ২৬ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ