অবশেষে
আবুল বাশার হাওলাদার
যৌবনের আরম্ভেই হলো পরিচয়,
দাম্পত্য জীবন দিয়ে শুরুটা শুরু,
ভালোলাগা- নালাগা ছিলো শুরুতেই,
তারপরও সহাবস্থান---বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রশ্নই আসেনি কখনো।
দু'টি জীবন এক হয়ে পথচলা,
কখনো বাকযুদ্ধ, কখনো তিক্ততা,
কখনো সৌহার্দ্যের অভাব-----আবার ঘর-সংসার করা হাসিমুখে,
যেনো কিছুই হয়নি।
সন্তানের লালন-পালনে এসব অন্তরায় হয়ে ওঠেনি কখনো;
ভালোই চলছিলো জীবন,
সামনে এগিয়ে চলা,
একবারো কটুবাক্য ব্যয় হয়নি,
গরমিল ছিলো না-----আবার ছিলো।
নইলে এতো কথা কেনো?
মনে হচ্ছিল ভালোবাসার কমতি ছিলোনা কোথাও,
তারপরও সবকিছুতে সন্দেহের ছাপ ছিলো,
ধোয়াসা ছিলো অনেকটাই।
কাছের-দূরের সকলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হতো এ বিষয়ে,
ঐক্য-অনৈক্য নিয়েই জীবন-সংগ্রাম,
দীর্ঘদিনের নৈকট্যের বন্ধন ছিঁড়বেনা কখনো
এমনই ভাবনা ছিলো তখন।
চিতায় ভস্মীভূত দেহ উড়ে যায় আকাশে,
তারপরও স্বর্গের অনুভূতি জাগে আত্মার ভেতরে লুকিয়ে থাকা কোনো শক্তি।
আমিও তেমনটি চেয়েছিলাম,
কিন্তু ঘটলো অঘটন,
অবশেষে তিরিশ বছরের সন্দেহের
বন্ধনের বিশাল ফাটল;
অনিশ্চয়তার ভবিষ্যতে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে,
হৃদয়ের শূণ্যতা ভরে গেছে জঞ্জালে।
++++++++++++++++++
ক্ষমা করে দিয়ো
আবুল বাশার হাওলাদার
অকৃত্রিম-অগাধ ভালোবাসা ছিলো এক সময়,
দাম্পত্যের নিগূঢ়তা প্রকট ছিলো,
বিনি সুতোয় বাধা হৃদয়ের আবেগ অনেক শক্ত করে,
তোমার ছায়া না দেখলে অস্থির হয়ে যেতাম,
এক মুহূর্তও ভালো লাগতো না,
আমিতো তোমারই ছিলাম।
তোমার ব্যস্ততা ছিলো আমাকে ঘিরে,
রাতের বিছানায় মাথায় হাত দিয়ে ঘুম পাড়ানো,
সকাল-সকাল নাস্তা করে ঘুম থেকে ওঠানোর কৌশল---গায়ে হাত দিয়ে মৃদু দোলানো,
গোসলের পানি গরম করে উচ্চস্বরে ডাক,
এখনো মনে পড়ে।
দূর থেকে এলে ঢুলু ঢুলু চোখের চাহনি,
কথা ছিলোনা মুখে একটিও,
বুঝে নিতাম সব মনে মনে,
কি বলতে চাও মন খুলে।
প্রশিক্ষিত সেবিকার মতো পাশে থাকতে সর্বদা,
আর দ্রুত সেরে ওঠার অপেক্ষায় থাকতে,
আমি জানি, তোমার হৃদয়টা অনেক বড়,
ভালোবাসতে প্রাণ দিয়ে,
যদিও কথার ফুলঝুড়ি ছিলো না মোটেও।
আমি খেয়েছি তোমার নুন,
তৃপ্ত ছিলাম সবকিছুতে,
তুমি মহীয়সী নারী,
তারপরও কোথাও যেনো অতৃপ্তি আর অবিশ্বাস ছিলো খানিকটা।
চেষ্টা করেছি কম নয় মেনে নিতে,
ছিলো সামান্য ত্রুটি,
আমি ব্যর্থ নিজেকে সামাল দিতে।
সরে গেছি দূরে,
এ ভুল আমার,
তোমার নয়----ক্ষমা করে দিয়ো একেবারে।
+++++++++++++++++++++
একই আকাশের তারা
আবুল বাশার হাওলাদার
জীবন যুদ্ধে মানুষগুলো অতিষ্ঠ,
কোথাও কাজ নেই, যোগ্যতাও নেই,
বোঝা হয়ে আছে সমাজ ও পরিবারের,
দিশেহারা অকর্মন্য মানুষগুলো,
কোথাও ঠাঁই নেই।
প্রতিবন্ধকতা জীবনের পথচলায়,
শারীরিক -মানসিক বৈকল্যের শিকার,
মানবজগতের অবহেলিত এক গোষ্ঠী।
ভালোবাসেনা কেউ হৃদয় দিয়ে,
আবার কেউ ফটোসেশনে ব্যস্ত এদের নিয়ে,
প্রকৃত বন্ধুর অভাব,
তারপরও ওরা বেঁচে আছে জীবন-সংগ্রামে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে।
একটু ভালোবাসায়ই তৃপ্ত হয়ে
ওরা জীবনের স্বপ্ন দেখে নতুন করে।
ওরা কি আসলেই প্রতিবন্ধী?
না মানবসৃষ্ট এক সমস্যা?
অথবা অবহেলায় ওদের ভাগ্য এখন বিড়ম্বনায় পূর্ণ।
নিষ্পাপ মানুষগুলোকে কে মানুষ করে তোলবে?
কে হবে ওদের প্রকৃত অভিভাবক?
আপনজনেরাও বিব্রত।
আমি চিন্তিত, প্রকৃতির বিচার কেমন?
ওরাও তো মানুষ, কেনো ওরা বিকৃত?
মানব সভ্যতার বোঝা হয়ে জন্ম,
ওরা হাসে-কাঁদে,
খেলা করে,
জগতটাকে চিনতে চায়,
আছে বাঁচার সাধ;
অন্যদের মতো বড় হতে,
স্বাবলম্বী হতে।
ওরাওতো একই আকাশের তারা,
একই বাগানের ফুল,
পার্থক্য অনেক।
ঢাকা, ০৪ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: