মাসুদ রানা : রাকিন আজকে প্রথম দেখা করতে যাচ্ছে সাদিয়ার সাথে। চারমাস ফেসবুকে রিলেশন করার পর তারা একে অপরকে দেখার জন্য পাগল হয়ে গেছে। রাকিনের বাসা রংপুর শহরে, অন্যদিকে সাদিয়ার বাসা বগুড়ায়। গত দুই মাস ধরে রাকিন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আজকেই তার পরীক্ষা শেষ হবে। এত প্যারা নেওয়ার পর তার জন্য একটু রোমান্টিকতা প্রয়োজন। আর সেজন্যই এত তাড়াহুড়ো করে দেখা কররা। সাদিয়ার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল সদ্য বের হয়েছে। সে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। তাই সেও মনের সুখে রাকিনের উদ্দেশ্যে দেখা করার জন্য রংপুর শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করল। সাদিয়া তার মাকে বলেছে, 'আম্মু, একটা পিকনিক আছে রংপুরে। আমি সেখানেই যাচ্ছি। ফিরতে রাত হবে, তুমি চিন্তা করিওনা।'
দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সাদিয়া রংপুর ক্যান্টপাবলিক কলেজের সামনে দাড়িয়ে ছিল রাকিনের অপেক্ষায়। রাকিন পরীক্ষা শেষ করে তার সাথে মিট করে তাকে নিয়ে বের হবে। পরীক্ষা শেষ করে রাকিন একটা উন্নত মডেলের বাইক নিয়ে সাদিয়ার সামনে আসলো। সাদিয়াতো দেখে পুরোই অবাক। এতটা সুন্দর রাকিন কেমনে সম্ভব? পিকে যা দেখছে তার চেয়ে অনেক সুন্দর সে। রাকিনকে তার অনেক পছন্দ হয়েছে। অন্যদিকে সাদিয়াকে রাকিনের তেমন একটা পছন্দ হয়নি। তবুও মজা নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাকে বাইকের পেছনে বসিয়ে শুরু হল তাদের রংপুর শহর চষে বেড়ানো। বাইকের স্পিড বাড়ার সাথে সাথে তাদের রোমান্টিকতাও বাড়তে থাকলো। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলে তারা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে রিচ ফুড খেয়ে নেয়। তারপর রাকিন সাদিয়াকে বলল,' চল আমার বাসায় গিয়ে আমার আম্মুর সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দেই'। বাইক ছুটে চলল তার বাসার পানে, সেই সাথে সাদিয়ার মনে ভয় ঢুকতে শুরু করলো।
দশমিনিট পর একটা বাসায় তারা প্রবেশ করলো। সাদিয়া রাকিনকে বলল,
-তোমার আম্মু কোথায়?
-পাশের ফ্লাটে গেছে হয়ত, এখনই আসবে।
-ওহ আচ্ছা।
ওই রুমে রাকিনের বন্ধু রাফি ছিল। রাকিন রাফিকে তার নিজের বড় ভাইয়া হিসেবে সাদিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। রাফি তাদেরকে বলল, 'ঠিক আছে তোমরা কথা বল, আমার একটু কাজ আছে আমি আসি। 'এই বলে সে চলে গেল। একটা কাপে হট কফি বানানোর পর দুজনেই এক কাপেই কফি পান করছে। দুজনই খুবই কাছাকাছি, শরীরটা তাদের একে অপরের সাথে লেগে আছে। তাদের দুজনের মাঝেই উত্তেজনা কাজ করছে। একজনের সাথে আররেকজনের গা লেগে যাওয়ায় যেন তারা হাই ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক শখ খেয়েছে। পরে নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে আদিম কামনায় তারা মেতে উঠে। প্রায় এক ঘন্টা তাদের একাকী সময় কাটার পর, রাকিনের বড় ভাইয়ারুপী সেই বন্ধু রাফি তার বাসায় আসলো। রাফিও সাদিয়াকে ভোগ করতে চাইলো। সাদিয়া এতে বাধা দিলে ডিএসলার ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিওটি রাফি প্রদর্শন করা শুরু করে এবং এটি ভাইরাল করার হুমকি দেখায়। শেষমেশ তাকে আরো একজনের সাথে সময় কাটাতে হয়।
বিকাল পাঁচটা। রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে বগুড়াগামী গাড়িতে উঠিয়ে দেয়া হয় সাদিয়াকে। সাদিয়া চলে যাচ্ছে। রেখে যাচ্ছে রাকিনের প্রতি একরাশ ঘৃণা ও ভালবাসার প্রতি অবিশ্বাস।
রাতে বাসায় পৌঁছল সাদিয়া। বাসায় গিয়ে দরজা দিয়ে শুয়ে পড়ল। সকালে সাদিয়ার ফোন বাজছে। রাকিন ফোন করেছে। সাদিয়া আর ফোন রিসিভ করছেনা। সে চায় না তার সাথে রিলেশন কন্টিনিউ করুক সে। ফোনে এস এম এস আসলো। তাতে লেখা, 'ফোন রিসিভ কর, নতুবা তোমার ভিডিও ফুটেজ... '।
বাধ্য হয়ে ফোন রিসিভ করে কথা বললো সে। এভাবেই নিজের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রাকিনের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে গেল সাদিয়া। এর মাঝে রাকিন তার ওই ভিডিও ফুটেজ দিয়ে ব্লাকমেইল করে প্রায় বিশ হাজার টাকার মত সাদিয়ার কাছ থেকে নিয়েছে।
তিনমাস পর, আজকে আবার সেই রুমে বসে আছে সাদিয়া। যেখানে তার মহামূল্যবান সম্পদ হারিয়ে ছিল সে। একটু পর রাকিন আসলো। তাকে ভোগ করলো। রাকিনের ভালবাসার মানুষ (!) সাদিয়া এখন অপেক্ষা করছে রাফির জন্য। একটু পর হয়ত সেও আসবে নরমাংসের স্বাদ গ্রহণ করার জন্য।
সর্বোপরি সে অপেক্ষা করছে মুক্তির জন্য। এসব ব্লাকমেইল, নিষিদ্ধ ভালবাসায় তরল পদার্থের খেলা তার আর ভাল লাগছেনা। কিন্তু কিভাবে সে এই শিকল থেকে বেরিয়ে আসবে? সে কি তবে সুইসাইড করবে? সাদিয়া ভাবছে এসব, গভীর মনোযোগের সঙ্গে, এদিকে রাফি তার শরীর নিয়ে খেলায় মেতে উঠছে। যে খেলায় সে ও তার বন্ধু রাকিন কখনো কোন মেয়ের সাথে হারেনি। কারণ তারা প্লেবয়। মেয়েদের মন ও শরীর নিয়ে খেলাধুলায় তারা অনেক দক্ষ। এ দক্ষতা তাদের শিরায় শিরায় প্রবাহিত হচ্ছে।
(গল্পটি পুরোটাই কাল্পনিক। কারো ঘটনার সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ি নয়)
Md Masud Rana ( জিরো টু ইনফিনিটি)
Doctor of Veterinary Medicine, HSTU.
ঢাকা, ১৫ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: