আমাকে আর ভালোবেসোনা
আবুল বাশার হাওলাদার
আমি হেরে গেছি মহত্বের কাছে।
একটি মানুষের হৃদয়--
কতটা গভীর,
কতটা প্রশস্ত,
কতটা মহান,
পরিমাপের কোন মানদণ্ড নেই।
তবে উপলব্ধি আর পর্যবেক্ষণের মাপকাঠি
যতোটা তীক্ষ্ম হবে,
ততোটা ফলাফল বেরিয়ে আসবে একসময়।
অনেক ভালোবাসা-ভালোলাগা ছিলো তোমার---
নিভৃতে আমার অগোচরে;
আমার প্রেমানুভূতি অনেক গভীর নয়,
উপলব্ধি প্রখর নয়,
মহত্বের মূল্যায়ন করতে পারিনি,
দীর্ঘ সময়েও আমার বোধশক্তির গভীরতা বাড়েনি;
অথবা আমি ভুল বুঝেছি তোমাকে,
কোথাও বা সন্দেহের তীর ছিলো।
সময় নিয়েছি অনেক,
তারপরও বোধগম্য হয়নি কেমন তোমার ভেতরটা,
অনেকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগেছি,
কিংকর্তব্যবিমূঢ় ছিলাম সর্বক্ষণ,
সময়-সময় ভুল ভেঙেছে,
আবার কি যেনো তাড়া করছিলো অন্য কিছু ভাবতে।
দোদুল্যমান একটি ভাঙা মন নিয়ে
কতোটা এগোনো যায় বুঝতে পারিনি।
মনের ভেতরটা পরিষ্কার ছিলোনা,
মূল্য দিতে পারিনি
একটি নির্মল-নিষ্কলুষ হৃদয়ের আবেদনকে।
অবশেষে তাই করলাম,
ভুলে গেলাম একেবারে,
বিকল্প ভাবনা নিয়ে পথচলা।
আমার চেতনা এতো দুর্বল!
এতোটা স্বার্থপর আমি ঘৃণ্য জীবের মতো!
কষ্ট দিতে পারি!
ব্যথা দিতে পারি!
স্বপ্ন ভাঙতে পারি!
তাই বলছি,
আমাকে আর ভালোবেসোনা।
---------------------------------
চিরন্তন সত্য
আবুল বাশার হাওলাদার
একটি সত্য---- চিরন্তন সত্য।
আমার ভেতরে বিশাল হৃদয় আছে,
অনুভূতি আছে,
উপলব্ধি আছে,
তা বাস্তব সত্য,
এগুলোর মাধ্যমে সমাজের প্রকৃতরূপ-বিকৃতরূপ উপলব্ধি করা যায়।
অনুমান করা যায়------নিজেকে মানিয়ে নেয়া যায় সবকিছুর সাথে এ সত্যের ওপর ভিত্তি করে।
আমি যা করি ঠিকই করি------বলতেই পারি,
বিবেকের কাছে প্রশ্ন করলে
যদি হ্যা বোধক বা না বোধক হয় তাই করবো--এটাই বাস্তব সত্য।
যদি ভুল করে কাউকে কষ্ট দেই,
বা অন্তরের গভীর থেকে কাউকে ভালোবাসি,
বা কাউকে অবিশ্বাস করি,
বা আস্থার অভাব থাকে কারো প্রতি,
সবকিছুতেই সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়।
যদি ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ভুল করে
অনুতপ্ত হই বা না হই,
কেউ নিজগুণে ক্ষমা করে মহত্ব দেখায়,
বেশ ভালো কথা-----অনেক ভালো।
যদি কাউকে করুণা করি বা না করি,
প্রয়োজনে সব উপেক্ষা করি,
মন যা বলে তাই করি--তবে কারো অনিষ্ট করিনা,
এটাই বাস্তব --বাস্তব সত্য।
যদি কোনো মহৎ কাজে প্রতিদান না পাই,
বা ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা পাই বা না পাই;
বা কেউ শুধু শুধু কষ্ট দেয়----ভুল করেও দেয়,
এগুলো বাস্তবতার চরম উদাহরণ।
যা বলার নয় তাই বলি,
যা করার নয় তাই করি
বা পছন্দ-অপছন্দের সবই করি,
যা শোনার নয় তাই শুনি বা শোনাই,
যেভাবেই হোক সবই বাস্তবতা,
সবই মেনে নিতে হয়,
সবই চিরন্তন সত্য।
----------------------------
হেমন্তের সকাল
আবুল বাশার হাওলাদার
পুরো শীত না এলেও শীত শীত ভাব,
সকালে ঘুম থেকে ওঠা একটু হলেও অস্বস্তিকর,
জানালার ভেতর থেকে রোদ্দুর বিছানায় পড়ছে,
প্রকৃতির রূপ অনেকটা অস্পষ্ট,
পূর্ব দিগন্ত কুয়াশায় আচ্ছন্ন,
সূর্যের উপস্থিতি ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে।
প্রিয়তমার ঘুম ভাঙেনা,
নকসি কাঁথা গায় জড়িয়ে বেহুঁশপ্রায়,
কতোনা সুখ হৃদয় মাঝে।
মানুষের কোলাহল শুরু,
এবাড়ি-ওবাড়ি নবান্ন উৎসবের আমেজে দিনটা শুরু।
শিশিরসিক্ত রাঙা পায়ে গৃহিণীর ছন্দে ছন্দে পথচলা,
কেউ কলসী কাঁখে জল আনতে পুকুরঘাটে,
কেউ বাসন-কোসন ধোঁয়ায় ব্যস্ত,
কেউ বা ফসলের ক্ষেতে কর্মব্যস্ত,
এখানে হেমন্তের সকাল সেইরূপেই বিরাজমান
যেমন অতীতে ছিলো।
মৃদু হাওয়ার ছোঁয়ায় শিহরণ জাগে শরীরে,
স্বচ্ছ আকাশের নিচে নিশ্চুপ পৃথিবী
একান্তে সকালবেলা,
কৃষকের পদচারণায় চারদিক মুখরিত,
পাকা ধানে ভরা সোনালি মাঠে বৈচিত্রের খেলা,
এমন স্নিগ্ধ সকাল দেখা যায়না কখনো।
সকালটায় পাখি বসে ডালে,
পাঠশালায় কোরাস পাঠের হৈ হুল্লোড়,
মাধূর্যময় হেমন্তের সকাল,
সুষমায় ভরে দেয় হৃদয়,
নতুন কিছু ভাবতে।
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: