Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

কুবিতে তদন্তে আটকে গেছে টুর্নামেন্ট, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বার ২০২২, ০০:১৬

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

চৌধুরী মাসাবি, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য বিভাগ গুলোতে চিঠি দিলেও পূর্বের একটি ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় আটকে আছে টুর্নামেন্ট। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিলো ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারীর কারনে টুর্নামেন্ট বন্ধ ছিলো। এই বছর আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য প্রতি বিভাগে চিঠি পাঠায় করে প্রশাসন। কিন্তু নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ হুমকি দেওয়ার অভিযোগের ফলে শারিরীক শিক্ষা দপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল আলমকে নিয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্তের সুরাহা না হওয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্ট স্থগিত রাখে ক্রীড়া কমিটি।

রেজিস্টার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মার্চ শারিরীক শিক্ষা দপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল আলমের বিরুদ্ধে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও খেলা শুরু না করায় এবং প্রতিপক্ষ দল মাঠে উপস্থিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অশোভন আচরণ করেন। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারমুখী ভঙ্গিতে উচ্চবাচ্য করেন এবং বলেন, ‘আমি যেভাবে বলি সেভাবে খেলা চলবে, কার সাহস ও ক্ষমতা আছে দেখি তোমাদের খেলা চালায়। আমার যখন ইচ্ছা তখন খেলা চালাবো। এখন কোনো খেলা চলবে না।’ এরপর তিনি মাঠ ছেড়ে চলে যান।

পরে ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪০ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বর্ণা মজুমদারকে সদস্য এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আমিরুল হক চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় এবং কোন সুরাহা না হওয়ায় আটকে আছে ফুটবল টুর্নামেন্ট। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমরা তদন্তের প্রতিবেদন তৈরি করেছি এবং এই সপ্তাহের মধ্যে জমা দিব। এরপর প্রশাসন বাকি পদক্ষেপ নিবে।

এদিকে এতোদিন পরেও তদন্তের সুরাহা না হওয়ার ঘটনাকে প্রশাসনের অনীহা হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এইচ এম পিয়াস নামের এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, "যতটুকু শুনেছি বিগত কোনো এক টুর্নামেন্টে দু'পক্ষের ঝগড়ার জন্য এত দিন বন্ধ ছিলো। শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে যাওয়ার পর উনারা বলেছেন ভিসি স্যারের কারণে টুর্নামেন্ট হচ্ছে না। যখন আবার টুর্নামেন্ট হবে শুনলাম তখন খুব আশাবাদী ছিলাম যে টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করবো। কিন্তু পরে আর টুর্নামেন্টে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছুর আয়োজন করতে পারে কিন্তু এই ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে এত অনীহা কেনো?

ইমদাদুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, "ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য প্রত্যেক বিভাগে অংশগ্রহণ করার জন্য চিঠিও আসে। তারপর থেকে আমরা নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছিলাম হঠাৎ করে একদিন শুনি টুর্নামেন্ট হচ্ছেনা। কেন হচ্ছেনা? আর কবে হবে? আর যদি তারা টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না পারে তাহলে কেন বিভাগে চিঠি দিয়েছে? আবার ঘোষণা না দিয়ে টুর্নামেন্ট ক্যান্সেল করেছে এই প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর আমাদের জানা নেই। তবে একটা গুঞ্জন শুনেছিলাম যে ভিসি স্যার নাকি চাননি তাই হচ্ছে না"।

ফুটবল টুর্নামেন্ট কেন হচ্ছে না জানতে চাইলে শারিরীক শিক্ষা দপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সুরাহা না হলে টুর্নামেন্ট করবে না কমিটি। বিভাগে টুর্নামেন্টের জন্য চিঠি কেনো দেয়া হয়েছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি ভিসি স্যারের আশ্বাসে চিঠি দিয়েছি।

এ বিষয়ে ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ শামিমুল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ক্রীড়া কমিটি মনে করেছে তদন্তের বিষয়টি সমাধান হওয়া দরকার যেহেতু শিক্ষার্থীরা করেছে। আমরা উপাচার্যের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি এবং সমাধান চেয়েছি উনি বলেছেন যেহেতু আমরা একটা তদন্ত কমিটি করে ফেলেছি আমি তাদেরকে ডেকে বলবো এটা যতদ্রুত সম্ভব সমাধান করে দিতে। উপাচার্যের এই আশ্বাসে আমরা ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য বিভাগগুলোতে চিঠি দিয়েছি কিন্তু দৃশ্যমান কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমরা এটা পেন্ডিং করে দিয়েছি। আমরা কমিটি আবার বসেছি এবং উপাচার্যের আবার সময় চেয়েছি কিন্তু উপাচার্যের সময় পাইনি। যে ঘটনা ঘটেছে আমরা মনে করি কালক্ষেপণ না করে তা সমাধান করা উচিত।

এতদিন পরেও কেন তদন্তের সুরাহা হয়নি জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম মঈনকে বরাবরের মতো একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ