
স্পোর্টস ডেস্ক: আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক দিন কাটালো টাইগাররা। সাকিব-হৃদয়ের দারুণ ইনিংসে বড় স্কোর গড়ার পর বোলারদের দাপটে সিলেটে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অতিথিদের ১৮৩ রানে উড়িয়ে দিয়েছে তামিম ইকবালের দল।
ওয়ানডেতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। আগেরটা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬৯ রানের। শনিবার (১৮ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৩৩৮ করে বাংলাদেশ।
সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও মাত্র ১৫৫ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস। তাতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে তামিম ইকবালের দল। এর আগে টাইগারদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয় ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সিলেটের এই ভেন্যুতেই ২০২০ সালের ১ মার্চ জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে পাহাড়সম ৩৩৯ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩০.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান তুলে ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা।
ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে বেশ দারুণ শুরু পেয়েছিল আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেণার। এসময় দলের রান ৫১ করে ফেলেছিল তারা। তবে বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। তার স্পিন ঘুর্ণিতে আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহানি ৩৮ বলে ৩৪ রান করে উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
এরপর যেন আগুন হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের দুই পেসার এবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। দলীয় ৬০ রানে প্রথম উইকেট হারানো সফরকারীরা ৭৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে যায়। সাত নম্বরে নেমে শেষ ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেওয়া জর্জ ডকরেল ৪৭ বলে ৪৫ রান করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান করেছে।
এদিন পল স্টার্লিং ২২, কুর্টিশ ক্যাম্পার ১৬ ও মার্ক এডিয়ার ১৩ রান করেন। বল হাতে ৬ ওভার ৫ বলে ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এবাদত হোসেন। নাসুম আহমেদ ৩টি, তাসকিন ২টি ও সাকিব ১ উইকেট নেন।টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তবে ইংল্যান্ড সিরিজের মতো আইরিশদের বিপক্ষেও ব্যর্থ হন টাইগার কাপ্তান তামিম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মার্ক এডেয়ারের বলে স্লিপে পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন তামিম। ৯ বলে ৩ রান করে আউট হলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে জুটি গড়ে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। তবে দলীয় ৪৯ রানে লিটনের ২৬ রানে বিদায়ে তাদের ৩৪ রানের জুটি ভেঙে যায়। দশম ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে কাভারে স্টার্লিংকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন।
এরপর ৮১ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আঊট হন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিদায়ের আগে এই ব্যাটারের কাছ থেকে আসে ২৫ রান। এরপর চতুর্থ উইকেটে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসান। তারা দুজনে মিলে ১৩৫ রানের বিশাল জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করেন।
কিন্তু মাত্র ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা সাকিব। তার ৮৯ বলে ৯৩ রানের ইনিংসে ছিল ৯ বাউন্ডারির মার। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে মুশফিকুর রহিম ঝড় তোলেন। ২৬ বলে ৪৪ রান করেন তিনি।
অপর প্রান্তে তৌহিদ হৃদয়ও সজোরে ব্যাট চালাচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল অভিষেকে সেঞ্চুরি করে ইতিহাসই গড়বেন তিনি। কিন্তু হৃদয় নার্ভাস নাইন্টিজের ঘরে গিয়ে ৯২ রান করে আউট হয়ে যান। সব মিলিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ।
ঢাকা, ১৮ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: