স্পোর্টস লাইভ: নাম করা আর নামজাদা। সবই যেন শেষ। এখন বাকী অন্যজন। তার দিকে সকলেরই তীক্ষ্ণ নজর। সবার মুখে একই রব। একই সুর। কি হবে এই সেলিব্রেটি খেলোয়ারের হাল-হকিকত। এনিয়ে খেলা প্রেমিদের ঘুম হারাম।
লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার জুনিয়র, মেসুত ওজিল, মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে, ইসকো, লেভেনডভস্কি, কেভিন ডি ব্রুইন, হ্যারি কেন ও লুইস সুযারেজ। তারকার অভাব ছিল না বিশ্বকাপে।
তবে সেলিব্রেটি খেলোয়ার মেসি-রোনালদো ও নেইমার। অবিতর্কিতভাবে ফুটবল বিশ্বের সেরা তিন মহানায়ক। ইতিমধ্যে তিন নায়কের দুজনকে এবারের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে দেখেছে ফুটবল প্রেমীরা। তাদের জন্যে কোটি কোটি ভক্তের চোখের অশ্রু বিসর্জন দিয়েছেন।
খেলার মাঠ থেকে জানা যায় ঈন্দ্রপতনের শুরুটা হয়েছিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেই। ওজিল, মুলার, ক্রুসরা মিলেও জার্মানিকে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠাতে ব্যর্থ হন। তবে ফুটবলবিশ্ব আক্ষরিকভাবে হোঁচট খায় লিওনেল মেসির বিদায়ে।
ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে এবারের বিশ্বকাপ সফর শেষ হয় আর্জেন্টিনার। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডেও খুঁজে পাওয়া যায়নি মেসিকে।
আমরা যদি গত এক যুগের হিসেব করি তাহলে মেসির চেয়ে সেরা ফুটবলার ফুটবল বিশ্বে পাওয়া যায়নি। ক্লাব ফুটবল ইতিহাসে মেসির চেয়ে অর্জন আর কারো নেই। এক যুগের ক্যারিয়ারে কি জেতেননি তিনি।
বার্সেলোনার সমৃদ্ধ ইতিহাস তো মেসিরই পায়ে গড়া। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বার্সাকে পাঁচবার ব্যালন ডি অরসহ আটবার লা লিগা, পাঁচবার কোপা দেল রে, সাতবার সুপার কাপ, চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ, তিনবার করে উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন মেসি।
জানা যায় ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ ও তিন বছর পর অলিম্পিকের স্বর্ণপদক ছাড়া আর্জেন্টিনার হয়ে আর বড় কোনো সাফল্য নেই মেসির। ২০১৪ সালে একক নৈপূণ্যে দলকে ফাইনালে তোলেন তিনি।
তবে সতীর্থদের ব্যর্থতায় কাপ জেতা হয়নি তার। আর্জেন্টিনাকে দুবার কোপা আমেরিকার ফাইনালে তুললেও ট্রফি জেতাতে পারেননি সেমি। খুব সম্ভবত এটাই শেষ বিশ্বকাপ ছিল মেসির। জাতীয় দলের হয়ে সাফল্য না জেতাটা আজীবনই ভোগাবে তাকে।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে গেছে । একক নৈপূণ্যে পর্তুগালকে গ্রুপ পর্ব থেকে দ্বিতীয় পর্বে নিয়ে আসেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। মেসির মতো রোনালদোর আক্ষেপটাও একই।
দুজনই সমর্থন পাননি সতীর্থদের কাছ থেকে। উরুগুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে রোনালদোকে কড়া পাহারায় রেখেছিলেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডাররা। এই কারণেই স্বভাবজাত খেলাটা খেলতে পারেননি তিনি।
এবার পর্তুগালকে নিয়ে অনেক আশা ছিল ফুটবলভক্তদের। ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। ইউরোর মতো একটা চমক দেখার আশায় ছিলেন পর্তুগিজ সমর্থকরা। শুরুটা সেভাবেই হয়েছিল।
রোনালদোর হ্যাটট্রিকে স্পেনকে আটকে দেয় দলটি। পরের ম্যাচে মরক্কোকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডও নিশ্চিত করে। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে আর পারলেন না রোনালদো।
একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে দুটি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জয়ের রেকর্ডটা রেনালদোর। রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটিও তার। পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়েও সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটিও রোনালদোর।
ইউরোপ মহাদেশের সব দেশ মিলিয়েই জাতীয় দলের হয়ে তার চেয়ে বেশি গোল করেছেন মাত্র একজন।ইউরোতে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি রোনালদোর দখলে। ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৪টি ইউরোতে গোল করার রেকর্ডটি রোনালদোর দখলে।
স্প্যানিশ লা লিগায় সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিকও তার। ২০০৭ থেকেই ফিফা বর্ষেসেরা একাদশের নিয়মিত মুখ রোনালদো। এতো কিছু ব্যক্তিগত অর্জন! তবে বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতেই ফিরতে হলো তাকে। মেসির মতো সেআরসেভেনেরবো এটি শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে। এমন ধারনা এখন অনেকেই পোষন করেন।
শেষ ভরসা:
এখন দুনিয়া ফুটবল প্রেমিদের চোখ নেইমারের দিকে। আসরে এখন পর্যন্ত টিকে আছে ব্রাজিল। দ্বিতীয় রাউন্ডে সেলেসাওদের প্রতিপক্ষ মেক্সিকো। অপেক্ষাকৃত দূর্বল প্রতিপক্ষ বলেই ধারণা করা হচ্ছে আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে ব্রাজিল।
নেইমার এবারের আসরে সেরা ছন্দে নেই। ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার পর নিজেকে খুঁজে ফিরছেন এই তরুণ। কুতিনহো-পলিনহোদের পিছে ভর করে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত এসেছে ব্রাজিল।
ফুটবল প্রেমিকের মনের অবস্থা ভাল নয়। কারণে অনেকের পছন্দের দল ও খেলোয়ার এখন খেলার মাঠের বানের ঝড়ে পড়েছে।
ঢাকা, ০১ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)/এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: