লাইভ প্রতিবেদক : গণিতে ভয় নিয়ে স্কুল পালানোর ঘটনা অনেকের ভাগ্যেই ঘটেছে। আবার অনেকেই ওই ভয়কে জয় করে গণিতের মাঝেই আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন। গণিতকে ভালোবেসে জয় করে নিয়েছেন স্বর্ণপদক। গণিতে স্বর্ণজয়ী এমন ৩ জনকে নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন :
জয়নব আক্তার : এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় তার। ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতায় এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পান তিনি। এরপর ২০১১-১২ সেশনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকেই স্বপ্নযাত্রার শুরু। গণিত বিষয়ে তার ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ ছিল বলে প্রথম সেমিস্টারেই ব্যাচের সবার চেয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেন। দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারে সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পান তিনি। সর্বশেষ অনার্স ব্যাচের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৮৬ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি। ভালো ফলাফলের পুরস্কার হিসেবে পান এ.এফ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক। এ সফলতার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান তার মায়ের। তিনি রাত ৩টায় ঘুম থেকে উঠে তার জন্য খাবার রান্না করতেন। নিয়মিত ক্লাস করায় স্যারদের লেকচার মনোযোগসহকারে শুনতেন এই মেধাবী।
জাকির হোসেন : ছোটবেলা থেকেই গণিতের প্রতি দুর্বলতা ছিল তার। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছেন মেধাবৃত্তি। এসএসসি ও এইচএসসিতেও জিপিএ পেয়েছেন ৫। রাত ১০টা পর্যন্ত টিউশনি করতেন তিনি। তারপর মেসে ফিরে গভীর রাত পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেন। ২০০৯-১০ সেশনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে ভর্তির সুযোগ পান তিনি।
সামনের সারিতে বসে শিক্ষকদের লেকচার মনোযোগসহকারে শুনে খাতায় লিখে রাখতেন। বাসায় গিয়ে রিভিশন দিতেন। এভাবে পড়ালেখা করে অনার্সে গণিত বিভাগের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৯২ অর্জন করেছেন তিনি। অনার্সে ভালো ফলাফল করায় প্রথম এ.এফ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক পান তিনি। এ অর্জন তাকে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। মাস্টার্সেও সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পেয়ে রেকর্ড করেছেন তিনি। মাস্টার্সের এ অভাবনীয় ফলাফলের জন্য আবারো এ.এফ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক পান তিনি।
সাজিয়া সুলতানা কেয়া : প্রতিদিন তার বাসা নারায়ণগঞ্জ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে অনেকটা সময় ব্যয় হতো এর সাথে থাকত অসুস্থতা। কিন্তু পড়ার যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতেন তিনি। বাসায় এসে গভীর রাত জেগে গণিতের কঠিন কঠিন সমীকরণ মেলাতেন। বুদ্ধি খাটিয়ে সমস্যা সমাধান তার খুব প্রিয়। আর গণিতে ওই কারণেই তার আগ্রহ বেশি। এত কষ্ট ও পরিশ্রমের ফলাফলও পেয়েছেন তিনি। অনার্সে তার ব্যাচের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩.৮৯ পেয়েছেন ওই মেধাবী। ভালো ফলাফলের পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন এ.এফ মুজিবুর রহমান স্বর্ণপদক। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী গোল্ড মেডেল ২০১৬ এর জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। মূলত নিজের জেদ, মা-বাবার ও পরিবারের সদস্যদের দোয়া, বন্ধুদের উত্সাহ ও শিক্ষকদের প্রেরণাই তাকে সফলতার পথ দেখিয়েছে।
[কার্টেসি : ইত্তেফাক]
ঢাকা, ৩০ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: