Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বাংলা কলেজে শিক্ষার্থীকে বাথরুমে আটকে রাখলেন শিক্ষক!

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বার ২০১৭, ০১:৫৯


লাইভ প্রতিবেদক: শিক্ষার্থীকে বাথরুমে আটকে রাখার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। ধিক্কার দিচ্ছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও। ভুক্তভোগী শিক্ষর্থীর কান্নায় পাষন্ড শিক্ষকের মন গলেনি। "স্যার আমাকে বাথরুমে আটকে রাখবেন না, পরীক্ষা দিতে দেন। স্যার আপনার পায়ে পড়ি, পরীক্ষা দিতে দেন। এভাবেই রাজধানীর সরকারী বাংলা কলেজের ছাত্র নাহিদ স্যারকে বার বার অনুরোধ করে মুক্তি পায়নি। প্রায় চার ঘন্টা দুর্গন্ধময় বাথরুমে আটকে রাখেন ওই শিক্ষক"

সরকারি বাঙলা কলেজের এক ছাত্রকে ষান্মাসিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি শিক্ষক। গত রোববার কলেজের টয়লেটে আটকে রেখে ষান্মাসিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হয়নি একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের নাহিদ হাসান লিন্টনকে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে পূর্ণভাবে সমর্থন দিয়েছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ।

অভিযোগ পেয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে গঠিত কমিটির সদস্যদের।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান জানান, শনিবার রাতে কবি নজরুল কলেজের সঙ্গে ব্যাটমিন্টন খেলায় জেতে বাঙলা কলেজ। পরদিন রোববার এ নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগে ওই মিছিলে অংশ নেয় বাঙলা কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের নাহিদ হাসান লিন্টন।

মিছিল শেষ করে পরীক্ষার কক্ষে গেলে ঢুকতে বাধা দেন অ্যাকাউন্টিং বিভাগের লেকচারার ইয়ামিন হোসেন। পরে তিনি ওই শিক্ষার্থীকে ৪ ঘণ্টা টয়লেটে আটকে রাখে। পরীক্ষা শেষ হবার পরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নাহিদ।

নাহিদ বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই ওই শিক্ষক আমাকে আটকে রেখে ষান্মাসিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি আমাকে। বিষয়টি লিখিতভাগে কলেজ প্রিন্সিপালকে জানিয়েছি। ক্যাম্পাসের বড় ভাইদেরও জানিয়েছি।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ ব্যাপারে বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পবিত্র চন্দ্রশীল জানান, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা। ক্যাম্পাসের খেলায় জেতার কারণে আয়োজিত আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়া কোনো অপরাধ হতে পারে না। আর এমন কারণে টয়লেটে বন্দি করে রেখে পরীক্ষা বঞ্চিত করার কোনো অধিকার শিক্ষকের নেই। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান মিয়া জীবন বলেন, বাঙলা কলেজের প্রিন্সিপাল ও অভিযুক্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী মনা শিক্ষার্থীদের পদে পদে হয়রানি করে আসছেন তারা। নাহিদের মতো সাধারণ শিক্ষার্থীও এ থেকে বাদ যায়নি। কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি, উল্টো ৩ ঘণ্টা ওই শিক্ষার্থীকে টয়লেটে বন্দি করে রাখেন ইয়ামিন নামের ওই শিক্ষক। এ ঘটনায় প্রিন্সিপালের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাঙলা কলেজের প্রিন্সিপাল ইমাম হোসেন সেন্টু বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তিনি যেসব যুক্তি দিয়েছেন তা যথোপযুক্ত মনে করিনি। তাই পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগর শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিককে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এনামুল হক হাওলাদার ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান।

কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রিন্সিপাল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, ওই ছাত্র তার সঙ্গে বেয়াদবি করেছিল। কিন্তু এ কারণে একজন ছাত্রকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে না দিয়ে আটকে রাখাটা অনুচিত। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ