Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বাঁশের সাঁকোতে হাজার শিক্ষার্থীর ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০১৭, ০২:০৮

শেরপুর লাইভ: শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড উত্তর দাড়িয়ারপাড় কালঘোষা নদীর শাখা খালের উপর দাসাস মোড় সংলগ্ন মিয়ার আলী ফকিরের বাড়ির সামনে সেতু নেই।

ফলে খালের ওপর নির্মিত কাঠ ও বাঁশের সংমিশ্রণে তৈরী সাঁকোগুলো দিয়ে এ ওয়ার্ডের ৬টি গ্রামের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী এবং কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সাঁকোগুলো পারাপার হতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিশু, শিক্ষার্থী, রোগী, বৃদ্ধা নারী-পুরুষ ও গর্ভবতী মহিলাদের।

জানা গেছে, গড়ে প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ও ৩ ফুট প্রস্থের সাঁকোগুলো উঁচু-নিচু অবস্থায় আছে। নেই শক্ত খুঁটি ও দুই পাশে রেলিং। চলার সময় ভাঙা ও নড়বড়ে সাঁকোগুলো দোলতে থাকে। বর্ষা মৌসুম এলেই অতি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পানির প্রবল স্রোত থাকায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ভয়ে বিদ্যালয়ে যায় না। ফলে তাদের ব্যাহত হয় পড়াশোনা।

এছাড়া এ সাঁকোগুলোর উপর দিয়ে কৃষকদের কৃষিপণ্য, গবাদি পশু ও রিক্সা, ভ্যান বা মোটরসাইকেল যাতায়াত করতে পারে না। যেকোনো সময় সাঁকোগুলো ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী আশংকা প্রকাশ করেছেন। এ জায়গা গুলোতে পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ও কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধিত হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকেই এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকোগুলো দিয়ে ওই খালের উপর দিয়ে পারাপার হয় ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। প্রতিদিন এ পথে ধানশাইল ইউনিয়নের উত্তর দাড়িপাড়, নয়া পাড়া, পূর্বপাড়া, পশ্চিম পাড়া, বড় বাড়ি, বিলবাড়ি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ ওই ভাঙা ও নড়বড়ে সাঁকোগুলোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

ধানশাইল উচ্চ বিদ্যালয়, ধানশাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর দাড়িয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাপাঝোড়া নূরাণী ইসলামিয়া মাদ্রাসা, ঝিনাইগাতী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করে এ পথে।

উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামের শিক্ষক মো. আল হারুন বলেন, নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটে পাস করার পর আর প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকে না।

একই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা জানান, বৃষ্টি এলেই পানির স্রোত বেড়ে যায় তখন (পানিতে) পড়ে যাওয়ার ভয়ে বিদ্যালয়ে যায় না সে।

শেরপুর সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবণ আহাম্মেদ বলেন, সাঁকো পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। অনেকে প্রায়ই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায়।

উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিম বলেন, পাকা সেতুর অভাবে আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না। ফলে কৃষক তার উৎপাদিতপণ্য বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারে না, শিক্ষার্থী ও রোগীদের ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট দ্রতু সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

ধানশাইল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ওয়ার্ডের এ সেতু গুলো না থাকায় শিক্ষাক্ষেত্রে ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক পিছিয়ে আছি।

ধানশাইল ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই স্থানগুলোতে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের জন্য দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে।

 

ঢাকা, ০৮ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ