সিরাজগঞ্জ লাইভ: মেয়েকে ইভটিজিং ও তুলে নেয়ার প্রতিবাদ করায় বাবাকে চাইনিজ কুড়াল ও হাতুড়িপেটা করে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাতিজার বিরুদ্ধে। এতে আহত ওই মেয়ের বাবার মাথায় ১২টি সেলাই পড়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে সয়দাবাদ ইউনিয়নের জারিলা গ্রামে সরেজমিন গেলে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলবার খানের ভাতিজা সবুজ খান। আর আহত ওই ব্যক্তির নাম জাকারিয়া।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর নানি বলেন, আমার নাতনি স্থানীয় স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। প্রায় ১ বছর ধরে স্কুলে ও রাস্তায় বের হলে তাকে উত্ত্যক্ত করে একই গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসীর আব্দুল কাদেরের ছেলে সবুজ খান। এ বিষয়ে সবুজের পরিবারকে জানানো হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত (১৭ মে) বুধবার দুপুরে সবুজ খান, রিপন, শুভ ও ইমন চাইনিজ কুড়াল ও হাতুড়ি দিয়ে ওই ছাত্রীর বাবার উপরে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা হাতুড়ি ও রড দিয়ে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে জাকারিয়ার মাথায় ১২টি সেলাই দিয়েছে। এছাড়া তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা প্রতিদিনই আমাকে ইভটিজিং করতো এবং তুলে নিয়ে যাবার হুমকি দিতো। বাবা এসবের প্রতিবাদ করে। এজন্য তারা আমার বাবাকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি ও চাইনিজ কুড়াল ও রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে।
ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন, এর আগে সবুজ পোড়াবাড়ী স্কুলে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করেছিল। ইভটিজিং করায় সময় এক শিক্ষক বাধা দিলে সবুজ সেই শিক্ষককে মারপিট করে। পরে ওই শিক্ষক সবুজের নামে মামলা করেছিলেন।
অভিযুক্ত সবুজ খানের চাচা গোলবার খান বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় আমার ভাতিজাকে জাকারিয়া মারপিট করেছিলো। বিষয়টি এলাকার মুরব্বিদের জানানো হয়েছে। পরে ভাতিজা সবুজ ও তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে জাকারিয়াকে মারপিট করেছে। বর্তমানে ভাজিতাসহ তার বন্ধুরা বাড়ির বাইরে আছে।
সয়দাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুমন বাবু বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মারপিটের পরে হাসপাতালে গিয়ে আহত জাকারিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রোগীর পরিবারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি বর্তমানে জাকারিয়ার অবস্থা ভালো না।
এ বিষয়ে সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা বলেন, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। দুপক্ষকে মীমাংসা করার জন্য বলা হয়েছে।
সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাকে অবগত করেছে। আমি আহত জাকারিয়াকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বলেছি। জাকারিয়া সুস্থ হলে দুপক্ষের মুরব্বিদের সাথে নিয়ে মীমাংসা করে নেওয়ার কথা বলেছি।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা, ২০ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমবি//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: