Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ক্লাস বন্ধ রেখে স্কুলের মাঠে ভোটের গান

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০২৩, ০৬:০৭

ছবি: সংগৃহীত

আশুগঞ্জ লাইভ: ক্লাস বন্ধ রেখে স্কুলের মাঠে হয়েছে নির্বাচনি জনসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের বহুল আলোচিত প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার জন্য এই আয়োজন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনও। মঞ্চে ওঠা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জনসভায় নেতারা বক্তৃতা না করলেও, বিকেল ৪টা পর্যন্ত উচ্চশব্দে মাইক বাজিয়ে চলে ভোটের গান। তাই ক্লাস হয়নি।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আড়াইসিধা কে.বি. উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। যদিও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সেলিম মিয়ার দাবি, ক্লাস বন্ধ ছিল না। তিনি বলেন, ‘নেতাদের বক্তৃতার জন্য দেড় ঘণ্টা টিফিনের বিরতি দেওয়া হয়েছিল। টিফিনের পর বেলা দেড়টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ক্লাস নেওয়া হয়েছে।’ সেলিম মিয়া আড়াইসিধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরও সভাপতি।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন জানান, ‘বেলা একটা পর্যন্ত ক্লাস চলেছে। এরপর মাইকের শব্দের কারণে ক্লাস নেওয়ার পরিবেশ ছিল না। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।’ স্কুলের দিনে বিদ্যালয়ের মাঠে কেনো নির্বাচনি সভা আয়োজন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে- প্রশ্নের জবাব দেননি প্রধান শিক্ষক।

সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের ড্রেস পরে শিক্ষার্থীরা মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্লাস বন্ধ। তখনও ‘উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া সমর্থক গোষ্ঠী’র ব্যানারে আয়োজিত জনসভা শুরু হয়নি। বেলা সোয়া ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা যায়, সবকয়টি শ্রেণিকক্ষ শূন্য। একটি কক্ষে ইভিএমে ভোটের অনুশীলন চলছে। সেই সময়ে বিদ্যালয়ের মাঠে বানানো প্যান্ডেলে চলছিল গান। মাঠের ভেতরে ও বাইরে চারটি মাইক এবং দুটি লাউড স্পিকারে বাজছিল গান। স্কুলে ড্রেস পরা শিক্ষার্থীদের মঞ্চের সামনে বসে চটুল গান শুনছিল। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী জানাল, সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হয়। দুটি ক্লাস হয়েছে। এরপর আর হয়নি।

আচরণবিধি অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। আচরণবিধি ভেঙে উকিল সাত্তারের পক্ষে সভায় ভাষণ দিতে আসেন জেলার সভাপতি এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আরও ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমদ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সায়েম মিঠুসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

মঞ্চে বসা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ান স্থানীয় নেতারা। তখন সভা সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে আহমদ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনি প্রচারের সময়সীমা সোমবার বেলা ১২টায় শেষ হয়েছে। এ কারণে আমিসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেননি। আওয়ামী লীগ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে না।’

স্কুলের ক্লাস বন্ধ করে নির্বাচনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে জানি না। সভার আয়োজকরা বলতে পারবেন।’

উল্লেখ্য, বিএনপির সংসদ সদস্যেরা গত ডিসেম্বরে দলের সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করেন। উকিল সাত্তার পদত্যাগী সাত এমপির একজন। তাঁর পদত্যাগে আসন শূন্য হওয়ার ২০ দিন না পেরোতেই উপনির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে নামেন তিনি। বিএনপি তাঁকে বহিষ্কার করেছে। তবে আওয়ামী লীগ তাঁকে সমর্থন করে উপনির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি। দলটির তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও ভোট থেকে সরে গেছেন। জাতীয় পার্টির দুইবারের সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধাও সরে গেছেন। উকিল সাত্তারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ মিলছে না চারদিন ধরে।

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ