লাইভ প্রতিবেদক: মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত প্রশ্ন সংযোজনের ঘটনা অনভিপ্রেত। কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেওয়া যায় না। এটা এক ধরনের ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। এর প্রতিবাদের এক যৌথ বিবৃতিতে দেশের ২৪ জন বিশিষ্টজন এহেন কাজের শাস্তি দাবী করেছেন। আর এসব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আজবান জানান।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ শুক্রবার প্রেরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে।
পাশাপাশি একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ববাদ দেওয়ার যে দাবি তুলেছে, তাও আমাদের বিচলিত করছে। এ সব বিষয়ে এসব বিষয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও মুক্ত চিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমণ্ডুকতায় ঠেলে দেবে।
এতে আরও বলা হয়, হেফাজতের ১৩ দফা দাবি মেনে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদ্রাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষাগ্রহণ করছে। অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকরা নিজেদেরকে এই পদ্ধতি উপযোগী গড়ে তুলতে পেরেছেন কিনা- তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন আছে।
সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে। বিবৃতি প্রদানকারীরা হলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে. চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঐক্যন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি সভাপতি এস.এম.এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ ও অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সমাজকর্মী এম এ সামাদ, অলক দাস গুপ্ত ও এ কে আজাদ, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী ড. সেলু বাসিত প্রমুখ।
ঢাকা, ১১ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএল
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: