Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

সহপাঠীকে শিক্ষকের কিল-ঘুষি, শ্রেণিকক্ষে জ্ঞান হারাল দুই ছাত্রী

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবার ২০২২, ০৪:১১

চকপ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়

নওগাঁ লাইভ : ক্লাসে পাঠদানের সময় উচ্চস্বরে পড়া না বলার কারণে শিক্ষার্থীদেরকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এতে ঘটনাস্থলে দুই ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাদের দ্রুত নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলার চকপ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পরে ওই শিক্ষককে পাঠদানে বিরত রাখার নিদের্শনা দিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বুধবার দুপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করাচ্ছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষক ক্লাসের বেশ কয়েকজনকে পড়া জিজ্ঞাসা করেন। ৪/৫ জন শিক্ষার্থী নিচু স্বরে উত্তর দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ওই শিক্ষক। এসময় তিনি উচ্চস্বরে উত্তর না দেওয়ার কারণে ৪/৫ জন শিক্ষার্থীর পিঠে কিল ঘুষি থাপ্পর মেরে গালিগালাজ করেন। এতে ওই ক্লাসের দুই ছাত্রী শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক তাদের উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ৮টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে অভিভাববকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গুরুতর অসুস্থ ওই ছাত্রীর মামা বলেন, আমার বোন-ভগ্নিপতি ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করেন। আমার বাসায় থেকেই পড়াশোনা করে ভাগ্নি। উচ্চস্বরে পড়া দিতে পারেনি বলে শিক্ষক এভাবে তাদের মারধর করবে আমরা চিন্তাও করতে পারছি না। ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। অপর অসুস্থ শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, শিক্ষকের মারধরে আমার মেয়ে খুব ভয় পেয়েছে। সে আর স্কুলে যাবে কিনা এ নিয়ে আমি চিন্তিত আছি।

এদিকে শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, উচ্চস্বরে পড়া কথা না বলার কারণে তাদের মারধর করা হয়নি। শ্রেনিকক্ষের ভিতরে হইচই করার কারণে ক্লাসের চার শিক্ষার্থীকে মৃদু শাসন হিসেবে হালকা চড়-থাপ্পর মারা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মারধর করার নিয়ম নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাচ্চাদের একটুআধটু শাসন তো করতেই হয়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, ঘটনার সময় আমি অফিসে দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। দুপুর আড়াইটার দিকে জানতে পারি, দুই ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে গেছে। পরে আমরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। আমরা বিষয়টির সার্বিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফারহানা শারমিন বলেন, শাসনের কারণে দুজনই মারাত্মক ভয় পেয়েছে, টেনশনে রয়েছেন ঘটনার পর থেকে। এদের মধ্যে মারিয়াকে সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। আর রিসিতাকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ওয়াসিউর রহমান বিষয়টি অবগত হয়েছেন বলে জানান, বিষয়টি জানার পরেই অভিযুক্ত শিক্ষককে আপাতত পাঠদানে বিরত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষককে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল গফুর বলেন, এই ঘটনায় অভিভাবকদের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়েরের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ