Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শরীয়তপুরে সন্তান জন্ম দিয়েই পরীক্ষার হলে মা

প্রকাশিত: ১ অক্টোবার ২০২২, ০৩:৫৪

সন্তান জন্ম দিয়েই পরীক্ষার হলে মা

শরীয়তপুর লাইভ: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষা শুরু করেন শরীয়তপুরের শায়লা আক্তার। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষা শুরুর কিছু আগে হাসপাতালে কন্যা সন্তান জন্ম দেয় সে। এর পরই কেন্দ্রে ছুটে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষ করে আবার হাসপাতালে নবজাতকের কাছে ছুটে আসে শায়লা।

তার এমন অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখে শিক্ষক ও সহপাঠীরা অভিভূত ও আনন্দিত। শায়লা শরীয়তপুর পৌরসভার নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার স্ত্রী। শায়লার পরিবার সূত্র জনায়, শরীয়তপুর পৌর এলাকার আংগারীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শায়লা আক্তার। সে এবার আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

এদিকে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নীলকান্দি এলাকার সবুজ মিয়ার সঙ্গে শায়লার বিয়ে হয়। এরপর সন্তান সম্ভবা অবস্থায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। ওই অবস্থায় সে পরীক্ষা দিতে থাকে। মঙ্গলবার ছিল তার ভূগোল পরীক্ষা।

সকালে প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে জেলা সদরের রুপসী বাংলা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। এরপর ১০টার দিকে স্বাভাবিকভাবে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় সে। বেলা ১১টার তার পরীক্ষা ছিল। সুস্থভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সে ছুটে যায় পরীক্ষায় অংশ নিতে।

এদিকে হাসপাতাল থেকে আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। পরিবারের সদস্যরা শায়লাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হন বেলা সাড়ে ১১টার সময়। কেন্দ্র সচিব ও শিক্ষকদের সহায়তায় সে পরীক্ষা দেয়।

পরীক্ষা শেষে দুপুর দেড়টার দিকে আবার সন্তানের কাছে হাসপাতালে ফিরে আসে। শায়লা বলে, সন্তান পেটে নিয়েই আটটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আজ লিখিত পরীক্ষার শেষ দিনে কোল আলো করে সন্তান এসেছে। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি নির্বিঘ্নে আমার কোলে সন্তান দিয়েছেন। সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে পারায় শিক্ষক ও চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি সন্তান লালনপালনের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাব।
শায়লার স্বামী সবুজ মিয়া বলেন, শায়লা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।

সন্তান জন্ম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উতলা হয়ে ওঠে। স্বজনদের কাছে সন্তান রেখে তাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাই। আংগারীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আনোয়ার কামাল বলেন, একজন শিক্ষার্থীর কতটা অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে প্রসব ব্যথা উপেক্ষা করে পরীক্ষায় বসতে পারে। আমরা বিশ্বাসই করতে পারিনি সে ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারবে।

তার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করে একজন নারী চিকিৎসক উপস্থিত রেখেছিলাম। সুস্থ দেহে পরীক্ষা শেষ করে সন্তানের কাছে ফিরে যাওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি। আংগারীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, শায়লা আমাদের বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী। সন্তান সম্ভবা অবস্থায় সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

আজ সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় আমরা গর্বিত, আনন্দিত। এতে এলাকাবাসীও খুশি।

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ