সাতক্ষীরা লাইভ: এ কেমন কাণ্ড। শিক্ষকের সাথে মশকারা। শিক্ষকের চেয়ারে সুপারগ্লু লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এখনেই শেষ নয় পরদিন অভিভাবকরা স্কুলে এসে শিক্ষককে মারধরের ঘটনাও ঘটিয়েছেন। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় শিক্ষার্থীকে মৃদু চড় মারার ঘটনায় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বেধড়ক মারপিট করে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এনিয়ে এলাকায় নানান সমালোচনার সুস্টি হয়েছে। বিষয়টি এখন গোটা এলাকায় আলোচনার খোরাক হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম লিখিত অভিযোগ করেছেন শ্যামনগর থানায়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর আলহাজ মুজিবর রহমানের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বুধবার (২৪ আগস্ট) পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ক্লাস নেওয়ার সময় তিনি বোর্ডে লেখালেখি করছিলেন। সে সময় শিক্ষার্থীরা তার বসার চেয়ার সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে দেয় এবং বসতে বলে।
কিছুক্ষণ পরে আবার উঠতে বলে। শিক্ষক ওঠে দাঁড়ানোর সময় চেয়ারে প্যান্ট আটকে যায়। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হাততালি দিতে থাকে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মৃদুভাবে কয়েকটি চড় মারেন ওই প্রধান শিক্ষক। লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) স্কুলের কাজ শেষ করে শ্যামনগর শিক্ষা অফিস যান তিনি।
শিক্ষা অফিসের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গোবিন্দপুর মুজিবর হাজির বাড়ির সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা শিক্ষার্থীর বাবা আলমগীর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মুজিবর রহমান, সেকেন্দার আলীসহ ৪-৫ জন বেধড়ক মারপিট শুরু করে। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করে ওই শিক্ষককে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শাসন করায় অভিভাবকরা আমাকে এভাবে মারধর করবে কল্পনাও করিনি। আমি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। স্কুলের জায়গা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বিভেদ চলে আসছে। জায়গা উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করায় আমাকে বিভিন্ন সময় মামলা-হামলা দিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে। চাকরি করতে দেবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুত করার পাঁয়তারা চলছে।’
এ ব্যাপারে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইসমাত আরা বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। যতদূর জেনেছি, স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বনিবনা হচ্ছে না। এজন্য এসব ঘটনা ঘটছে।’
এদিকে শ্যামনগর থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযোগ পত্রটি জমা দিয়েছে শিক্ষক আবুল কাশেম। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ধরনের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের তৈরী হয়েছে গ্রামে দু'টি দল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়।
ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: