লাইভ প্রতিবেদক: অনিয়মের যেন শেষ নেই। নামী-দামী স্কুলটিতে এখন চলছে নানান মুখরোচক কাহিনী। এক সময়কার ইতিহাস হারাতে বসেছে বর্তমান কার্যক্রম। খৃষ্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্টানকে ঘিরে নানান তথ্য বেরিয়ে আসছে। অবশেষে শিক্ষকদের দেওয়া মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারপিতা ফাইহা। এমন অভিযোগ হলিক্রস গার্লস স্কুলের অভিভাবকদের। প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করা, খাতায় নম্বর কম দেওয়া, অভিভাবকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগও আছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন ভিন্ন কথা।
পারপিতার আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী দলের প্রধান ড. রেহানা খাতুন। ২৩ আগস্ট ঢাকার ২৯ তেজগাঁও স্টেশন রোডের বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে পারপিতা ফাইহা।
তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। আসতে থাকে অভিযোগ ও অনিয়মের ফিরিস্থি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে উঠে আসে হলিক্রস গার্লস স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পদ্ধতি, পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করা, প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করাসহ নানান অনিয়মের কথা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, এরা যখন তথন বাচ্চাদেরকে টিসি দিয়ে দেয়। বাচ্চারা মানসিক বিষণ্ণতায় ভোগে। এর থেকে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটে।
অপরদিকে এক নারী অভিভাবক বলেন, বাচ্চাকে বলছে বাবা-মাকে নিয়ে আসতে। এ কারণে বাচ্চাটা আত্মহত্যা করেছে। বাচ্চাটা চায় নাই-তার জন্য তার বাবা-মা অপমানিত হোক। আরেক অভিভাবক বলেন, আজেবাজে প্রশ্ন দিয়ে চাপে রাখে। না জানলে মার দেবে, টিসি দেবে, অপমান করব। এটা বাচ্চাদের জন্য লজ্জাজনক বিষয়।
এদিকে হলিক্রসের এক শিক্ষার্থী জানান, পারপিতা ফাইহার মৃত্যুকে ঘিরে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে এমন আশঙ্কায় সরকারি ছুটিসহ আরও দুইদিন স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর ফোনে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, আমি পড়তে বাধ্য করি না বা আমার কাছে পড়তে হবে-এমন না।
তবে আমি প্রশ্ন কঠিন করি, যাই করি প্রধান শিক্ষককে বলেও কিছু করতে পারবা না। কেউ আমার কিছু করতে পারবে না। এসব অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলে নানান অজুহাতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষায় রাখে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে হলিক্রস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শ্রেণি শিক্ষক (নবম) রোকেয়া বেগম বলেন, এ কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের স্কুলের পুরোনো মেয়েরা আছে, অভিভাবকরা আছে, সবাইকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন-এমনকি দশম শ্রেণিতে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করেছে, আমরা ওদের দুই থেকে চারটা পর্যন্ত মডেল টেস্ট নেই।
যতক্ষণ পর্যন্ত পাস না করে আমরা বোর্ডে পাঠানোর আগ পর্যন্ত পরীক্ষা নিতেই থাকি।আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর-ডিআইএ।
এদিকে হলিক্রস গার্লস স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমে নানা অনিয়ম পাওয়ার ইঙ্গিত দেন তদন্তকারী দলের প্রধান ড. রেহানা খাতুন। তিনি বলেন, কোনো কারণে এই আত্মহত্যাকে প্ররোচিত করা হয়েছে কি না, সে কারণে আমরা...এখন মনে হচ্ছে কিছু বলা ঠিক হবে না।
আমরা অল্প সময়ের মধ্যে এটা (তদন্ত) শেষ করে দেব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করব। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা দেওয়ার চেষ্টা করব। হলিক্রস স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, গণিতের শিক্ষক শোভন রোজারিও ও বিজ্ঞান শিক্ষক ফারাহের বিরুদ্ধেও আছে নানান অভিযোগ। অবশ্য তারা এনিয়ে বিনিয়ে নিজেদের পক্ষেই সাফাই গেয়ে চলেছেন। বলেছেন আমরা কোন অন্যায় করিনি। কোন শিক্ষার্থীকে চাপ দেই না। যে খানে পড়ছে তাতে আমাদের কিছুই বলার নেই।
ঢাকা, ২৬ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: