Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ত্রিভুজ প্রেম: জীবন দিতে হলো স্কুলছাত্রীকে, কারাগারে প্রেমিক

প্রকাশিত: ১৯ আগষ্ট ২০২২, ০৫:০৭

সানজিদা আক্তার ইভা ও প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম ওরফে সায়েম

রংপুর লাইভ: রংপুরের কাউনিয়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সানজিদা আক্তার ইভা নামে এক স্কুলছাত্রীর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিভুজ প্রেমের বলি হতে হয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্রী ইভাকে। আট মাস আগে প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম ওরফে সায়েমের সঙ্গে প্রেমের বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু এই বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক সায়েম। রাগে ক্ষোভে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন সানজিদাকে।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকালে রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মো. আশরাফুল আলম পলাশ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম সায়েম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের তাশুক উপাশু গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য নুর হোসেনের ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

অপরদিকে হত্যার শিকার সানজিদা আক্তার ইভা কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের গোড়াই গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী পীরগাছা উপজেলার বড়দরগাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

ঘটনার বিবরণে এএসপি আশরাফুল আলম বলেন, এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য সানজিদার ব্যাগে পাওয়া একটি খাতা ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ওরফে সায়েমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে দেওয়া জবানবন্দিতে সায়েম তার প্রেমিকা সানজিদার সঙ্গে তিন বছর আগে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে জানায়।

তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে সায়েম ও সানজিদার সম্পর্ক ভেঙে গেলেও যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। এরই মাঝে গত ১৬ আগস্ট দুপুরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সায়েম সানজিদাকে নিয়ে রংপুর নগরীর শাপলা টকিজে সিনেমা দেখতে যান। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেমের বিষয়টি জানতে পারে সায়েম এবং এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

পরে সায়েম তার পূর্ব পরিচিত আরও দুইজনের সাহায্যে কৌশলে সানজিদাকে মাহিগঞ্জে রেখে পরে সেখানে আবার মিলিত হয়। তারপর তারা পীরগাছায় তিস্তা নদীর পাড়ে নির্মিত আলীবাবা থিম পার্কে ঘুরতে যায়, কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় সানজিদা ফিরে আসার জন্য চাপ দেয়। এরপর মধুপুর রোডের একটি ফাকা জায়গায় নিয়ে সানজিদার একাধিক প্রেম নিয়ে আবার তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সায়েমসহ তিনজন মিলে উপর্যুপরি ছুরিকাহত করে সানজিদাকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।

আশরাফুল আলম জানান, গ্রেপ্তার সায়েম হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে আরও একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত।

এদিকে আজ সকালে আসামি সায়েম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আনিসুর রহমান।

নিহত স্কুলছাত্রীর চাচা সোলেমান আলী বলেন, সানজিদার দুঃসম্পর্কের মামা হন নাহেদুল ইসলাম সায়েম। পারিবারিকভাবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় এ নিয়ে অনেক ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সানজিদা সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায়। গত আট মাস ধরে তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে জানতে পেরেছি। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাউনিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তার গলায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৮টি জখমের চিহ্ন ছিল।

ঢাকা, ১৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ