Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঠাকুরগাঁওয়ের তিন স্কুলে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়েই ভরসা

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০১৭, ২০:১৭


ঠাকুরগাঁও লাইভ: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ বণিক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য ২০১৬ সালে ৩৫০জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেয় ৮০ আসনের বিপরীতে।
এই ভর্তি পরীক্ষায় একধরনের যুদ্ধ করেই উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের একজন কামরুন নাহার। অন্যান্য বিদ্যালয়ের থেকে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার মান ভালো এমনটা মনে করেই ভর্তি হওয়া বলে জানায় কামরুন নাহার।


সে আরো বলে,“ভর্তির পরীক্ষার আগে মনে করেছিলাম স্কুলে ক্লাস করেই বুঝি পরীক্ষার সিলেবাস কমপ্লিট হয়ে যাবে।কিন্তু সেই ভরসা পাচ্ছি না। স্কুলে বেশি শিক্ষক নেই। প্রত্যেকটা ক্লাসও সময় মত হয় না। একজন স্যারকেই একাধিক ক্লাস সামলাতে হয়।এজন্য পরীক্ষার সিলেবাস শেষ করার জন্য এখন কোচিংয়ে দুই বেলা পড়ি। স্কুল ছুটির আগে ও পরে। কোচিংয়েই এখন পরীক্ষার সিলেবাস কমপ্লিট করার একমাত্র ভরসা।”  শুধু কামরুন নয় তার মতো ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এখন পরীক্ষার পাঠ্যসূচি শেষ করার একমাত্র ভরসা কোচিং সেন্টার।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটে ভুগছে ঠাকুরগাঁওয়ের উপজেলা পর্যায়ের ৩টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। আর শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে পরীক্ষার পাঠ্যসূচি শেষ করতে কোচিং সেন্টারে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।


গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,পীরগঞ্জ বণিক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ ১৩ টি হলেও এর মধ্যে আছেন মাত্র ৪ জন। অপরদিকে রানীশংকৈল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন ৫ জন এবং নেকমরদ আলিমুদ্দীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৪ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৭ জন।আর এই তিনটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম।


এই তিনটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক সংকটের কারণে কয়েকটি শ্রেণীতে স্কুল সময়ে পাঠদান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মাঠে বসে কেউ আড্ডা দিচ্ছে,কেউ খেলাধুলায় ব্যস্ত। আবার অনেক শিক্ষার্থীকে শ্রেণী কক্ষে বসে একা একা পাঠ্যবই পড়তে দেখা যায়।


রানীশংকৈল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরিন আকতার বলেন,‘একজন শিক্ষককেই একসাথে একাধিক ক্লাস নিতে হয়।এক ক্লাসে লিখতে দিয়ে অন্য ক্লাসে গিয়ে পড়ায় শিক্ষকরা।এভাবে কোনমতে ক্লাস চলে।’


হাসনাঈন সুমি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে,‘অনেক সময় গণিতের শিক্ষককে শারিরীক শিক্ষা ক্লাস নিতে হয়।আর এতে আমরা শিক্ষার্থীরা বইয়ের কোন অংশে সমস্যায় পড়লেও সমাধান পায় না।ভালো মতো বুঝতে পারি না।’ গণিত,বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অতিথি শিক্ষকদের দ্বারা নেওয়ার ফলে ভালো মতো বুঝা যায় না বলে জানায় শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন।


সে আরো বলে,‘স্কুলের ক্লাসে বুঝতে না পারায় কোচিংয়ে পড়তে হচ্ছে।সেখানেই ভালো মতো বুঝতে পারি।’ পীরগঞ্জ বণিক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক শাহে আলম বলেন,‘ আমি নিজেও অপরাধ বোধ করি। কারণ শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।আর এই সংকট দ্রুত নিরসন না করা হলে এর প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফলে।’


শিক্ষক সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরও ব্যবস্থা না হওয়ায় এখন বিদ্যালয় চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান নেকমরদ আলিমুদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম।প্রায় একই রকম কথা জানান অপর দুই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকরা।


বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে মনে করছেন জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার। তিনি বলেন,“শিক্ষক সংকটে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে বিষয়টি আমরাও উপলব্ধি করছি। সমস্যা সমাধানের জন্য বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

 

ঢাকা, ০৭ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ