লাইভ ডেস্ক: সাবাশ। আপনিই পারবেন। আপনার সাহসিকতার তুলনা হয়না। আপনি দেখিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করলেন নাড়ীর টান। এলাকার টান। জন্মভূমির প্রতি মমত্ববোধ। প্রমাণ করলেন একটা সিদ্ধান্ত অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারে। হ্যাঁ আমরা মৌসুমি আক্তার এপির কথাই বলছি। থাকেন ঢাকায়। ঈদে আপনজনদের সান্নিধ্যে যেতে বাইসাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন ২৮০ কিলোমিটার পথ। নারী হয়ে এমন সাহসীকতায় পাচ্ছেন বাহবা। গোটা এলাকায় তিনি সাড়া লাগিয়েছেন। তাক লাগিয়েছেন।
একদিকে কোভিডের তাণ্ডব। এর থাবায় অনেকেই প্রাণহারিয়েছেন। চলমান লকডাউনে দূরপাল্লার সকল বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ। এমতাবস্থায় সারাদিন রোজা রেখে ২৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি যান এই শিক্ষিকা। গ্রামের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পৌর শহরের রথবাড়ি এলাকায়। বাবার নাম আব্দুল হাকিম তালুকদার।
তিনি 'চিটাগাং গ্রামার স্কুল ঢাকা’ নামের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
জানা যায় গত সোমবার অর্থাৎ ১০ই মে বিকাল ৪ টায় ঢাকার গোলাপবাগ থেকে বাইসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সঙ্গে যোগ দেন সিরাজগঞ্জের মীর রাসেল নামে অনার্সের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। সেখান থেকে তারা দু’জনে একটানা বাইসাইকেল চালিয়ে রাসেলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ভূঁইয়াগাতি এলাকায় পৌঁছান। এবার তিনি একাই টানা বাইসাইকেল চালিয়ে পৌঁছান বগুড়ায়। পথচারিরা তাদের এই সাহসিকতায় অবাক হয়েছেন।
বগুড়ায় এসে যাত্রাবিরতির পর তার বান্ধবী মালার বাসায় সেহরি শেষে মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে তিনি সান্তাহারের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে যাত্রায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। এরপর মোট ১৪ ঘণ্টা পর সকালে পৌঁছান সান্তাহারে। এভাবেই তিনি বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। তার এই সাহসী স্বপ্ন অনেকেই ভাবিয়ে তুলেছে। নতুন করে কিছু করার মানসিকতা যুগিয়েছে।
তার যাত্রা ও এই সাহসি পদক্ষেপের কথা জানতে চাইলে এপি বলেন, সাইকেল চালিয়ে বাড়ি যাওয়া দীর্ঘদিনের শখ ছিল। এবার সেটা পূরণ করতে পেরেছি। বাড়ি যেতে যানবাহন বা বিকল্প কিছুতে একরকম ভিড় ঠেলে যাওয়া লাগতো। আমি চাইনি ভিড় ঠেলে বাড়ি যাই। তাই বাইসাইকেল সবথেকে ভালো মাধ্যম বলে মনে করেছি। আর সাইকেল আমি দীর্ঘদিন ধরে চালাই তাই এই বাহনের সাথে সখ্যতা আগে থেকেই ছিলো।
মৌসুমি আক্তার এপি আরো বলেন, প্রথমে একটু খারাপ লাগছিলো। কিন্তু রাস্তার দৃশ্য দেখে আমি আমার মনকে বুঝাই। আমি সিদ্ধান্ত নেই এভাবেই যাব। আমি আমার মা-বাবার ও ভাই-বোনদের নিয়ে ঈদ করবো। পরে একজন ছেলেকে সঙ্গী দেখে সাহস আরো বেড়ে গেল। আমি ১৪/১৫ ঘন্টার পর বাড়িতে যাই। সবাই অবাক। সবাই খুশি। তবে কষ্ট মেনে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
ঢাকা, ১৩ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: