লাইভ প্রতিবেদক: ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক এস এম ফরহাদের নামে প্রবর্তিত বৃত্তি পেয়েছে ফরিদপুরের দুই কৃতী শিক্ষার্থী। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবস্থিত হা-মীম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে 'প্রফেসর এস এম ফরহাদ স্কলারশিপ-২০২১' তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বৃত্তিপ্রাপ্তরা হলেন ফরিদপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাহিন মুনকার সাজিন এবং ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বাণী। নাহিন বর্তমানে ঢাকার নটর ডেম কলেজ এবং বাণী ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদের সভাপতিত্বে এবং এস এম ফরহাদ স্কলারশিপ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রেজাউল হায়দারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্কলারশিপ পরিচালনা পরিষদের উপদেষ্টা ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক রানা চৌধুরী, হা-মীম গ্রুপের পরিচালক ও দৈনিক সমকালের প্রকাশক আবুল কালাম আজাদ এবং এস এম ফরহাদ স্কলারশিপ পরিচালনা পরিষদের সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইদুর রহমান। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন অধ্যাপক এস এম ফরহাদ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ফরিদপুর জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক রানা চৌধুরী তাঁর শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, এস এম ফরহাদ অত্যন্ত সুদর্শন, মেধাবী এবং শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ক্লাস করার জন্য শিক্ষার্থীরা সব সময় ক্লাসরুমে ভিড় জমাত। তিনি ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। এ সময় তিনি হা-মীম গ্রুপের ফাউন্ডেশন কিংবা ট্রাস্টের সঙ্গে এই বৃত্তিকে সংযুক্ত করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক এস এম ফরহাদ নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এই অনুভূতি প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যেখানে ভাষা কোনো কাজ করে না। কোনো শিক্ষক জীবিত থাকতেই তাঁর নামে তাঁর ছাত্র বৃত্তি চালু করেছে কিনা, আমি জানি না। এই সম্মান বিরল।
এ. কে. আজাদ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, কেউ মারা গেলে আমরা তাঁকে সম্মান দিই, স্মরণ করি। কিন্তু স্যারের জীবদ্দশায় আমরা তাঁকে সম্মান দিতে পারছি- এটা আমাদের সৌভাগ্য। আমরা সবাই একদিন না একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করব। কিন্তু বেঁচে থাকতে আমরা সমাজের জন্য, মানুষের জন্য কী করে যাচ্ছি- তা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, মা তাঁর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন, বুকের দুধ পান করিয়ে বড় করেন। মায়ের অবদান কখনও ভোলা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনি একজন শিক্ষক তাঁর ছাত্রকে শিক্ষা দিয়ে জীবন-সংগ্রাম মোকাবিলা করার জন্য যোগ্য করে তোলেন। শিক্ষকের এই অবদানকে কোনো কিছুর বিনিময়েই শোধ করা যায় না। আমার বিশ্বাস, ফরহাদ স্যার আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। স্যারের উত্তরসূরি হিসেবে তাঁর আদর্শ আমরা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেব।
অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট, বৃত্তির এককালীন ৫০ হাজার টাকা, সনদপত্র ও উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়।
ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: