লাইভ প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। ফলটি মৌসুমি হওয়ায় সারাবছর এই রসালো ফলের স্বাদ চাইলেও গ্রহণ করা যায় না। তবে এবার বারোমাসি কাঁঠালের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর ফলে বারোমাসি ফল হিসেবে পর্যাপ্ত কাঁঠাল পাওয়ার পথ খুলে গেল। এমনকি মৌসুমি কাঁঠালের চেয়ে চার গুণ বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে আবাদের মাধ্যমে কাঁঠাল রপ্তানি সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইজিবিই), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), কানাডার ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বিজ্ঞানীরা যৌথ গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের বারোমাসি কাঁঠালের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন। এসংক্রান্ত গবেষণা প্রবন্ধটি বিজ্ঞান সাময়িকী ‘ফ্রন্টিয়ারস ইন প্লান্ট সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির রামগড়ের চা-বাগানে বারো মাস ফলন দেয় এমন এক জাতের কাঁঠালের সন্ধান পান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা। এখন দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীরা এই জাতের কাঁঠালের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন। নতুন জাতের এই কাঁঠালের নাম রাখা হয়েছে ‘বারি-৩’।
গবেষকদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তোফাজ্জল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা পৃথিবীতে প্রথম বারোমাসি কাঁঠালের একটি জাত বারি কাঁঠাল-৩-এর পূর্ণাঙ্গ জন্মরহস্য উন্মোচন করেছি। এতে প্রাকৃতিকভাবে রামগড়ের পাহাড়ে জন্মানো এক ধরনের কাঁঠালকে নিবন্ধনের মাধ্যমে জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি সেপ্টেম্বর মাস থেকে জুন পর্যন্ত ফল দেয়, যার ফলন মৌসুমি কাঁঠালের চেয়ে চার গুণ বেশি। ফলের স্বাদ ও পুষ্টিমাণও খুব ভালো। এ গবেষণায় কাঁঠাল ফলের মধ্যে বিশাল বৈচিত্র্য এবং বারো মাস ফল প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত জিন শনাক্ত করেছি। গবেষণার ফলাফল জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে বারোমাসি কাঁঠালের নতুন নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জাত উদ্ভাবনে সহায়ক হবে। ’
গবেষণায় যুক্ত ছিলেন বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু শার্প। তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের গ্লোবাল ইনস্টিটিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় বঙ্গবন্ধু রিসার্চ চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, জীবনরহস্য উন্মোচনের ফলে উচ্চ পুষ্টিমান বিশিষ্ট কাঁঠালের জাত উদ্ভাবনের গবেষণায় তা কাজে লাগবে। যেহেতু বাংলাদেশের কাঁঠালের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য বিশ্ব জিনব্যাংকে প্রকাশিত হয়েছে, এখন তা পৃথিবীর সব আগ্রহী বিজ্ঞানী গবেষণায় ব্যবহার করতে পারবেন। কাঁঠালের উৎপত্তিস্থল নির্ণয় এবং কিভাবে কাঁঠাল বন্য অবস্থা থেকে মানুষের খাবার উপযোগী হলো তা জানা যাবে।
ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: