রাবি লাইভ: টাঙ্গাইলে র্যাবের অভিযানে নিহত দুই জঙ্গির মধ্যে একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। তার নাম আহসান হাবিব শুভ (২৪)। এর আগে ঘটনাস্থলে পাওয়া নিহত জঙ্গিদের ভোটার আইডি কার্ড থেকে তার পরিচয় আতিকুর রহমান বলে জানা গিয়েছিল। পরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র্যাবের পক্ষ থেকে তার প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানির (সিপিসি-৩) কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, আহসান হাবিব শুভর বাড়ি নওগাঁ জেলায়। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আলতাফ হোসেন ও আঞ্জুমান আরা বেগমের ছেলে।
মোহাম্মদ ফারুকী আরো বলেন, জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে নিজের পরিচয় লুকানোর জন্যই ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়েছিলেন শুভ। মঙ্গলবার রাতে তার বাবা আলতাফ হোসেন টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল মর্গে শুভর লাশ শনাক্ত করে গ্রহণ করেছেন।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, শুভ নওগাঁ কেডি স্কুল থেকে মাধ্যমিক, নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী বিভাগের সভাপতি ড. এ. এফ. এম. মাসউদ আখতার বলেন, নিহত আহসান হাবিব ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিল, সে ২০১৪ সালে তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন সময় ক্লাস-পরীক্ষা না দেওয়ায় ড্রপ-আউট হয়। পুলিশের প্রকাশিত ছবির সাথে বিভাগে থাকা তার বায়োডাটার সাথে মিল আছে বলে জানান তিনি। আমাদের বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম স্যার হত্যার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার ব্যাপারে আমাদের কাছে খোঁজ খবর নিচ্ছিল।
বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ইংরেজী বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্য, শরিফুল ইসলাম ও আহসান হাবিব শুভ একই সাথে থাকতো, অন্যদের সাথে খুব কম মিশত তারা। তারা ‘লর্ডস গ্যাং’ নামে গ্রুপে কাজ করতো এবং এই নামে একটি ফেসবুক চালাতো (বর্তমানে বন্ধ আছে)। যেখানে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস দিত।
এদের মধ্যে শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা মামলায় গ্রেফতার থাকা মুনতাসিরুল আলম অনিন্দ্যকে জঙ্গি সংগঠনের সাথে থাকার প্রথমিক প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া শরিফুল জঙ্গি কানেকশনে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিশ।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর মুজিবুল হক আজাদ খান বলেন, ‘নিহত জঙ্গি শুভ বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী শুনলাম। তবে এব্যাপারে এ মুহুর্তে বিস্তরিত কিছু বলতে পারছি না।’
এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর গোদাগাড়ি থানায় (মামলা নং-১৭) অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে শুভ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে ২০১৫ সালের মে মাসে জামিনে ছাড়া পান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। শুভর নিখোঁজের ব্যাপারে তার বাবা আলতাফ হোসেন ২০১৫ সালের ৭ জুলাই বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার ক্রমিক নম্বর ৩৬৫।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারা মির্জামাঠ এলাকায় র্যাবের অভিযানে নিহত হয় দুই জঙ্গি। তারা ওই এলাকার একটি তিনতলা বাসার নিচতলায় ছাত্র পরিচয়ে ভাড়া নিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছিল। এ সময় সেখান থেকে ১টি রিভলবার, একটি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, ১০টি চাপাতি, দুটি ল্যাপটপ ও ৬৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা, ১২ অক্টোবর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: