রংপুর লাইভ: নিষ্টুর। পাষান্ড। মাত্র ১১ বছরের এক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে ঢুকে নির্মম ভাবে মারধর করেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। শিক্ষকের সামনে থেকে মারধর করতে করতে টেনে বের করে নেয় ওই শিক্ষার্থীকে। কিন্তু ওই ব্যক্তির প্রভাবের কারণে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঘটনাটি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায়। ইকরামুল ইসলাম নামের স্কুলছাত্রটি নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ইকরাম দক্ষিণ কৈকুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার ৮ নং কৈকুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের ছেলে সে।
এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী মতিন মন্ডল নামে এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় বিদ্যালয় চলাকালীন শিশুটিকে শ্রেণী কক্ষ থেকে টেনে হেচড়ে শিক্ষকদের সামনে নির্মমভাবে মারধোর করেন। এ সময় ওই ছাত্রের মাথা দেওয়ালে লেগে ব্যথা পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিশুটি পরিবার, বিদ্যালয়ের শিক্ষক - শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার ইকরামুল ও শান্তা আক্তার নামে তার এক সহপাঠির মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। শান্তা স্থানীয় প্রভাবশালী মতিন মন্ডলের মেয়ে। এতে মতিন মন্ডল ক্ষিপ্ত হয়ে ইকরামুলকে মারধোর করেন।
আহত ইকরামুল জানায়, স্যার বাঁশি বাজাতে নিষেধ করলে আমি শান্তাকে বলি ওই বাঁশি বাজাইস না। শান্তা আমাকে গালি দেয় আমিও গালি দিলে, শান্তা ওর আব্বাক ডেকে এনে আমাক মারধর করে। আমাক চর-ঘুষি লাথি মারে ,মাথাত ঘুষি মারে আর দেওয়ালোত আছার মারে।
ভুক্তভোগী ইকরামুলের বাবা দুলু মিয়া অভিযোগ করেন, আমার ছেলেকে মতিন মন্ডল সমস্ত শরীরের মারাত্মকভাবে আঘাত করেন। তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আর বলছে এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাকে বাড়িতে এসে পিটাবে। তিনি আরও জানান আমরা এখন ভয়ের মধ্যে আছি।
প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলী জানান, দুই শিক্ষার্থীর মাঝে ঝগড়া বাধলে শান্তা নামে এক শিক্ষার্থী তার বাবা মতিন মন্ডলকে বললে সে এসে ইকরামুলকে মারধোর করে। আমরা ইকরামুলকে পীরগাছা মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে জানিয়েছি।
অভিযুক্ত মতিন মন্ডল জানান, ইকরামুলকে আমি মারধোর করি নাই। আমি শুধু প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। আমার মেয়েটাকে ইকরামুল মারছে।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি জানি না।
পীরগাছা মেডিকেলে কর্তব্যরত ডা সৈকত জানান, আগের চেয়ে অবস্থা একটু ভালো তবে মাথার আঘাতটা সিটিস্কান ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।
পীরগাছা থানার এস.আই শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যববস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা, ০৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: