লালমনিরহাট লাইভ: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন খুদে শিক্ষার্থীরা। সাময়িক পাঠদানের অনুমতি দেওয়া দুই শিক্ষককে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ফেরত দেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করেছে তারা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষকদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন ঘোষণা করে শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটি। শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখে বিক্ষোভ করছে ওই খুদে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য আটজন শিক্ষক রয়েছেন। এরই মধ্যে গত বুধবার হঠাৎ ওই বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মোসলেহা বেগমকে মহিষখোচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষক সেলিনা বেগমকে কুমড়িরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাময়িক পাঠদানের অনুমতি দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেবেকা আক্তার, চতুর্থ শ্রেণির আর্জিনা, আরফিনা ও পরিমল বলেন, তাদের গণিত ও প্রাক-প্রাথমিকের দুই শিক্ষককে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত তাদের ক্লাস বর্জন চলবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন জানান, প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষককে অন্যত্র পাঠদানের অনুমতি দিয়ে ঠিক তিনি করেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আদিতমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম জানান, চলতি দায়িত্বের কারণে বেশ কিছু পদ শূন্য হয়। তাই শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী (যার যে বিদ্যালয়ে পছন্দ) সাময়িক পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ অনুমতি দেওয়ার সাংবিধানিক ক্ষমতা না থাকলেও শিক্ষকদের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে এটা করা হয়েছে। যা সাময়িক, স্থায়ী নয়। তাই এটার কোনো অফিস আদেশও নেই।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হিসেবে চলতি দায়িত্ব নিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। এ শূন্য পদ পুরনের নামে বদলি বাণিজ্যে মেতে উঠেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এন এম শরীফুল ইসলাম।’ বিধি সম্মত না হলেও ৫-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে অর্ধশত শিক্ষককে বাড়ির পাশের বিদ্যালয়ে সাময়িক পাঠদানের অনুমতি দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, অফিস আদেশ ছাড়াই দুই সহকারী শিক্ষককে অন্যত্র পাঠাদানের জন্য পাঠান উপজেলা শিক্ষা অফিসার। এ দুই শিক্ষককে ফেরতের দাবিতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বদিয়ার রহমান জানান, শিক্ষককে বদলি বা ডেপুটিশনে দেওয়ার ক্ষমতা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নেই। শিক্ষকদেরকে টাকার বিনিময়ে নিজের এলাকায় পাঠদানের অবৈধ অনুমতি দিয়েছেন। যা কোনো অফিস আদেশ নয়।
ঢাকা, ০১ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: