রাবি লাইভ: ফেসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকি কার্যক্রম নিয়ে বিভ্রান্তির তথ্য ছাড়ানো ও কুৎসা রটানোর অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের তিন দিনেও মামলা আকারে রেকর্ড করেনি পুলিশ।।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে মতিহার থানায় আইসিটি আইনে অভিযোগ দায়ের করেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর মু. এন্তাজুল হক। অভিযুক্ত কাজী জাহিদুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর।
আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক এই সহ-সম্পাদক সম্প্রতি তার ফেসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে বিভিন্ন দুর্র্নীতি ও অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান জানান, সম্প্রতি কাজী জাহিদুর রহমান ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কার্যক্রম নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেছেন। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিঠি দিয়ে তাকে এ বিষয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলা হয়। তিনি কোন সদুত্তর না দিতে পারায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে থানায় অভিযোগ করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজান উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনও শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। বিষয়টি এখন পুলিশ দেখবে।’
শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি আমাদের কাছে সময় চেয়েছিল। তাই মামলা রেকর্ড করা হয়নি।’
তবে কারও অনুরোধে মামলা রেকর্ড করা বা না করার অধিকার আইন রাখে কিনা-প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিয়েছে। ওসির ক্ষমতা আছে বিষয়টি তদন্ত করার। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তারপরেও যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন ঘটনা তাই আলোচনা করে এটা করা উচিত।
ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সমিতি উর্ধ্বতন সঙ্গে কথা বলে আমাদের একটু ধৈর্য ধরতে বলেছেন। মামলা রেকর্ড করতে নিষেধ করেছেন তা নয়, তারা বলেছেন, একটু দেখি। আপোস বলে একটা শব্দ আছে।’
সমিতির সভাপতি প্রফেসর শহীদুল্লাহ্ বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। সেখানে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার আমাদের নেই। তবে আমরা চেয়েছিলাম, অভিযুক্ত যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। আমাদেরই একজন। তাই তিনি যদি দোষী হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে তার শাস্তি হোক। এ বিষয় নিয়ে আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি।’
এদিকে আইন প্রয়োগে পুলিশের দুই নীতিতে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি প্রদীপ মার্ডি বলেন, ‘আইন সবার জন্যে সমান। কিন্তু একই আইন প্রয়োগে পুলিশের দুইনীতি মানা যায় না। আইসিটি আইনে মামলা দায়েরের পরপরই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হবে, আর শিক্ষকের ক্ষেত্রে সেটা হবে না। এমনটি হওয়া উচিত হয়নি। এতে আমরা ক্ষুব্ধ।’
ঢাকা, ১১, নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: