Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রাবিতে সাদাদলের নেই কোন কার্যক্রম!

প্রকাশিত: ২৯ আগষ্ট ২০১৭, ১৭:২৯

রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত জাতীয়তাবদী ও ইসলামী মূল্যেবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপের (সাদাদল) কমিটি থাকলেও কার্যক্রম নেই। দুই বছর মেয়াদী কমিটি সাড়ে চার বছর অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে সরকার বিরোধী বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অযৌক্তিক ইস্যুতে বিগত কয়েকবছরে কোন কর্মসূচি গ্রহণ করেনি। সীমাবদ্ধ থেকেছে জাতীয় ইস্যুতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেমে নিন্দা জানিয়ে।

সাদাদলের শিক্ষকদের দাবী, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়িত্ব অবহেলা ও মূল নেতৃত্বের আপোষকামীতার কারণে সংগঠনটি এগোতে পারছে না।’ অভিযোগ অস্বীকার করে নেতাদের দাবী, ‘দেশের সার্বিক রাজনীতির কারণে সবকিছু সঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।’

খোঁজ নিয়ে যায়, ২০১৩ সালের মার্চে দুই বছর মেয়াদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয় সাদাদলের আহ্বায়ক কমিটি। কমিটিতে ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক ও বিএনপিপন্থী নেতা প্রফেসর শামসুল আলম সরকারকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাবেক প্রক্টর ও বিএনপি পন্থী নেতা প্রফেসর এনামুল হক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও জামায়াত পন্থী নেতা প্রফেসর বেলাল হোসাইনকে। এছাড়া কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ করা হয়, আইবিএর শিক্ষক ও বিএনপি পন্থী নেতা প্রফেসর হাসানাত আলীকে। আর কমিটিতে ৬৫ জনকে স্ট্যায়ারিং কমিটির সদস্য হয়।

পরবর্তীতে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৫ রামজান মাসের পরে আহ্বায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রফেসর শামসুল আলম সরকার। তারপর থেকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর এনামুল হক।

কিন্তু বিগত তিন-চার বছর ক্যাম্পাসে সরকার বিরোধী বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অযৌক্তিক ইস্যুতে কোন সাড়া লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি প্রত্যেক বছর একটি করে ইফতার মাহফিল করলেও এবছর তা করতে পারিনি। নিয়মিত নিজেদের মধ্যে মিটিংয়ে হয় না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অনেকটাই সংগঠনটি থেকেও না থাকার মত অবস্থা। এদিকে নিষ্ক্রীয়তার পিছনে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়িত্ব অবহেলাকে দায়ী করেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী একাধিক শিক্ষক। কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, ‘ মূল সমস্য হচ্ছে সংগঠনের দায়িত্ব আছে যারা, তারাই সংগঠনকে এগিয়ে নিতে চাই না।

সাদাদলের নিষ্ক্রীয়তার জন্য ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ককে দায়ী করে এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিগত ভিসি মিজানউদ্দিনের এলাকায় সাদাদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের বাড়ি হওয়ায় তিনি লিয়াজোঁ করে চলতেন। যার কারণে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা, ক্যাম্পাসে প্রশাসনের অযোক্তিক ইস্যু ও সরকার বিরোধী কোন কর্মসূচি গ্রহণ করেনি। তার কারণে পুরো সংগঠন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এসময় তিনি বলেন, ‘ আহ্বায়ক শামসুল আলম সরকার সুস্থ হওয়ার পরেও ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক তার কাছে দায়িত্ব ফেরত দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন। এছাড়া বর্তমান আহ্বায়ক শামসুল আলম সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ মিথ্য জালিয়াতির অভিযোগে এনে তাকে শাস্তির মুখেমুখি করলেও, সাদা দলের পক্ষ থেকে কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

অবশ্য অন্য একজন সাদাদলের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সঠিকভাবে সংগঠনটি পরিচালনা করছে। বরং অন্যরা তার বিরুদ্ধে সমলোচনার জন্য নানা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে। তিনি মিটিং ডাকলে ৬৫ জন স্টীয়ারিং কমিটির সদস্যের মধ্যে ১০-১৫ জন উপস্থিত হয়, করোম-ই পূর্ণ হয় না।’

নিজেদের বর্থ্যতার কথা স্বীকার করে বর্তমান কমিটির কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর হাসানাত আলী বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে সংগঠনটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। তাই এখন আবার নতুন করে কমিটি দিয়ে সংগঠনটিকে এগিয়ে নেওয়া সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে।’

আদর্শিক দ্বন্দের কারণে বিএনপির শিক্ষকরা কি জামায়াতের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে এব্যাপারে জানতে চাইলে আরবী বিভাগের শিক্ষক ও জামায়াতপন্থী নেতা প্রফেসর নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘না, আমাদের মধ্যে এধরণের কোন সমস্য নেই। কিন্তু দেশের সামগ্রকি রাজনীতির কারণে এখানেও কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

সাদাদলের আহ্বায়ক বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। কিন্তু ২০১৫ সালে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে এনামুল হক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। সংগঠনের কার্যক্রমের ব্যাপারে আমি তেমন কিছু বলতে পারবো না।’
সাদাদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বয়ক প্রফেসর এনামুল হক বলেন, ‘বর্তমান দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে আমাদের কর্মসূচি নিয়মিত নিতে পারছি না। তবে আমারা বিভিন্ন ইস্যুতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে থাকি। এছাড়া মাঝে-মধ্যে রাজনৈতিক ইস্যু ও বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মিটিং করে থাকি।’

দায়িত্ব আকড়ে ধরে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আহ্বায়ক স্যার অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি দায়িত্ব পালন করছি। পরে তাকে দায়িত্ব দিতে চাইলেও তিনি ও অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন।’ এসময় তিনি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কমটি দেওয়ার কথাও জানান।

 

ঢাকা, ২৯ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ