উমর ফারুক, রাবি: দীর্ঘ ছয় বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব পাওয়ার কথা ছিলো। নির্ধারণ করা হয়েছিল সম্মেলনের তারিখ। ১২ নভেম্বর সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছিল উচ্ছ্বাস, ব্যানার পোস্টার, শ্লোগানে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিলো পদপ্রত্যাশীরা।
গত ৫ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিকট সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন ৯৪ পদপ্রত্যাশী। শুরুতেই গুঞ্জন উঠেছিলো সম্মেলন নয় প্রেস রিলিজের মাধ্যমেই এবার কমিটি প্রকাশ করা হবে। তবে প্রস্তুতি না নেয়ায় বিষয়টি সবার কাছেই স্পষ্টভাবে জানা গেল।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করার কারনে অতিথিরা থাকতে পারবে না সেজন্য সম্মেলন না হওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। সম্মেলন না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমাদের ইচ্ছে ছিলো সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা সামনে সম্মেলনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেজন্য তারা আসতে পারছেনা। সেজন্যই সম্মেলনে এবার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে, আগামী ৩ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ায় ছাত্রলীগকে নতুন করে কোনো জেলা, উপজেলা ও অন্যান্য শাখার কমিটি প্রদান না করতে নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নতুন করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোনো জেলা, উপজেলা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা—সর্বোপরি কোনো শাখার কাগুজে কমিটি দিতে পারবে না।
এর আগে ৪ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেশকিছু শাখার কমিটি দেওয়ায় ও সেগুলো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে সম্মেলন না হওয়ায় এক ধরনের চাপা আতঙ্ক কাজ করছে নেতাকর্মীদের মাঝে। এবার গুঞ্জনের ফাঁকে কাগুজে কমিটি না দেয়ার বিষয়টিও সামনে আসলো।
রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান মিশু ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, 'সম্মেলন হলে অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো হতো। তবে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতেও এমন সিদ্ধান্ত হতে পারে।'
কমিটি না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে পদপ্রত্যাশী আরেক নেতা জাকিরুল ইসলাম জ্যাক ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'দীর্ঘ সময় পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হওয়ার কথা ছিলো। ক্যাম্পাসে নেতাকর্মীদেরদের মধ্যে প্রানচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিলো। সম্মেলন না হওয়াতে স্বাভাবিক ভাবেই খারাপ লাগছে তবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যে সিদ্ধান্ত নিবে সংগঠনের স্বার্থে আমরা তা মেনে নিব।'
আরেক পদপ্রত্যাশী আসাদুল্লাহ হিল গালিব ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, 'আমাদের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তাই আমি মনে করি এখন কমিটি দিতেও আর বাঁধা নাই। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।'
কাগুজে কমিটি না দেয়ার নির্দেশনা প্রসঙ্গে রাবি শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা মেহেদী হাসান তাপস ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'বিষয়টি আমিও শুনলাম। তবে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ওনি আমাদের যেভাবে বলবেন সেভাবেই করব। এখন সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছে। আর উপর থেকে এরকম নির্দেশনা হয়ে থাকে তাহলে রাবি ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া সম্ভব হবে না।'
ঢাকা, ১২ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: