
রাবি লাইভ: ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর এবং ভাঙচুরের অভিযোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অজ্ঞাতনামা ৩০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলার এজাহার দাখিল দিয়েছেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনও মামলা হয়নি। তারা প্রাথমিকভাবে একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। দ্রুতই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে আজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বৈঠকে মামলার সিদ্ধান্ত হয়। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানীর অফিসকক্ষে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ বৈঠক হয়। বৈঠক চলাকালেই হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসেন।
শামীম ইয়াজদানী বৈঠক শেষে জানান, হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় আমরা মামলা করছি। এরই মধ্যে একটি লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তাঁরা কাজে যোগ দেবেন। জরুরি ওয়ার্ডগুলোতে এরই মধ্যে চিকিৎসকেরা তাদের কাজ করছেন। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে আগামীকাল শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে তারা কাজে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
রামেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন বলেন, তাঁরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার চান। এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার না হলে আগামী শনিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করবেন। এরপর আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার রাতে হলের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী কেজিএম শাহরিয়ার। সহপাঠীরা তাঁকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে রাবি শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। ইন্টার্ন চিকিৎসকদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। রাতে রাবির কয়েকশ শিক্ষার্থী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। রাত সাড়ে ১১টায় হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে রাত সাড়ে ১২টায় আলোচনায় বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভায় ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় রাতেই পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রাত দেড়টায় ত্রিপক্ষীয় এই সভা শেষ হয়। কমিটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে এমন আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা রাত ২টায় ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
তবে ইন্টার্নদের কর্মবিরতির কারণে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হলো রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে আরেকটি তদন্ত কমিটি করেছে। পাঁচ সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিনকে।
এদিকে শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় নগরীর মতিহার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের একজন শিক্ষক বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
ঢাকা, ২০ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: