Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
ফলাফল ন্যূনতম সিজিপিএ- ৩.৫ নির্ধারণ...

রাবির 'বিতর্কিত' শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বার ২০২২, ২১:১৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৭ সালে প্রনয়ণ করা সেই বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিন্ডিকেট সদস্য এসোসিয়েট প্রফেসর সাদিকুল ইসলাম সাগর ক্যাম্পাসলাইভকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সিদ্ধান্তে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হতে অনার্স-মাস্টার্সে সিজিপিএ-৩.৫ সহ মেধাক্রম ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে। সাদিকুল ইসলাম সাগর ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা-২২ অনুমোদিত হয়েছে। নতুন এ নীতিমালা অনুসারে শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য একজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্স ফলাফল ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ এবং মেধাক্রমে ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে কোনো প্রার্থীরই অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ-৩.৫ এর নিচে হলে, তা শিথিলযোগ্য হবে এবং ইউজিসি প্রদত্ত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুসারে গণ্য করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল, যা পরে দেশব্যাপী মানসম্মত নিয়োগ নীতিমালা হিসেবে সমাদৃত হয়। সেই নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী অনার্স ও মাস্টার্সে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫ প্রাপ্তদের মধ্যে শুধু প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীরা শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু ২০১৭ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আবদুস সোবহান দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায়য় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। সেই নিয়োগ নীতিমালা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠে।

এই নীতিমালা সব অনুষদের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীদের আবেদনের বিষয়টি শিথিল করে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়া আবেদনের ক্ষেত্রে সিজিপিএ নিচে নামিয়ে আনা হয়। এমনকি কিছু অনুষদে আবেদনের যোগ্যতা সিজিপিএ ৩.০০ করা হয়, যা নিয়ে সারা দেশে চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

এদিকে ২০২০ সালে ইউজিসি এক তদন্তে জানায়, তৎকালীন সাবেক ভিসির শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করে তার মেয়ে ও জামাতাসহ, বিভিন্ন বিভাগে ৩৪ জন কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। পরে ওই বছরের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, ব্যাপকভাবে সমালোচিত এই নীতিমালা পরিবর্তনের লক্ষ্যে গত বছরের অক্টোবরে নতুন নীতিমালা প্রণয়নে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে প্রো ভিসি প্রফেসর ড. সুলতান-উল-ইসলামকে আহবায়ক ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল।

সে সময় রাবি প্রশাসন সময় জানায়, ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০৭তম সিন্ডিকেট সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগের নতুন এই নীতিমালা প্রণয়নে ইউজিসির গাইডলাইন ও রাবির শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৫ গুরুত্ব পাবে। কমিটি গঠনের ১০ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ততে ইতিবাচকভাবে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে, পূর্বের নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবকে নিচে নামিয়ে দিয়েছিলো। যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলো। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা না থাকায় অযোগ্য প্রার্থীরাই নিয়োগ পেয়েছে। এবারের নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে নতুন করে রাবির গৌরব ফিরে আসবে এবং স্বচ্ছতার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সেইসাথে যোগ্য প্রার্থীরাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবে মনে করছেন তারা। আবার অনেকে নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করার ব্যাপারেও বিপক্ষে মত দিচ্ছেন।

ফারদিন বিশ্বাস নামে এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'নিয়োগ নীতিমালা করার আগে পর্যাপ্ত ডাটা এনালাইসিস কিংবা সমীক্ষা চালানো হয়নি বলে মনে হচ্ছে। নীতিমালাটা ফ্যাকাল্টি বেজড করলে গ্রহণযোগ্য হতো। কিছু ডিপার্টমেন্টে শতকরা ৩০-৪০% শিক্ষার্থী ৩.৫ পায় আবার কিছু ডিপার্টমেন্টে ২-৩%। এটি আরো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা দরকার ছিল।'

শারমিন আক্তার নামে আরেক শিক্ষার্থী মনে করেন, ১ থেকে ৭ এর মধ্যে থাকতে হবে এটা অনিয়ম। নিয়োগ পরীক্ষা তো আর শুধু রাবির স্টুডেন্টরাই দিবে না তাই না? কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে কোনরকম. ৩.৫০ পেয়ে সিরিয়াল ২-৩ এর মধ্যে আবার কেউ ৩.৮০ পেয়েও ৭ এর উপরে... তারমানে আগের জন যোগ্য আর পরের জন অযোগ্য? কি ফালতো সিস্টেম!

জাহাঙ্গীর আলম নামে আরেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'অদৃশ্য শক্তির জোর না থাকলে সিজিপিএ- (4 out of 4) পাইলেও কাজ হবে না। ইহা এখন সবাই জানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়তে আসছে তারা আতেল না।'

নতুন প্রশাসন এসে তাদের মত করে নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন হয় এমন মন্তব্য করেছেন সাজিদ জাহিদ নামে আরেক শিক্ষার্থী। তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'নীতিমালা প্রতি বছরই চেইঞ্জ হয়, নো চাপ।'

ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//ওএফ//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ