রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকথার ইতিহাস বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। রবিবার (২৮ আগষ্ট) সকাল ৯টায়। ফলাফল পুর্নমূল্যায়নের দাবিতে একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এসময় আন্দোলনে শিক্ষককদের স্বেচ্ছাচারিতা ও ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় বিভাগের পাঁচজন নিয়মিত ছাত্রকে ভর্তি কমিটির সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দেন। ডিপার্টমেন্ট ও প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও এ বিষয়টা সুরহা করেনি। সমাধানের পথ খুঁজতে আন্দোলন নেমেছেন তারা। তবে নির্দিষ্ট কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি কোন শিক্ষার্থী।
পরীক্ষায় ফেল আসা শিক্ষার্থীরা হলেন- আব্রাহাম হাজদা খোকন, তাসনিয়া রহমান রিন্থি, মেহেদী হাসান পুলক, উইলিয়াম ও শাফিন।
তানজীম রহমান নীরব নামে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে বিভাগের আটটি সাবজেক্টে হয়রানির শিকার হচ্ছি আমরা। যেহেতু ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার তাই আমরা কাওকে কিছুই বলিনি। স্যারেরা আর মানুষ মনে করেনা। পাঁচজন শিক্ষার্থী যাদের ফেল এসেছে তারা সবাই নিয়মিত ক্লাস করে। ফেল করার কারণ নেই। তাদের সাথে অন্যায় হয়েছে। গত ৪ আগষ্ট থেকে সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি কিন্তু ২৪ দিন ধরে ঘুরাচ্ছে। শেষপর্যন্ত আন্দোলনে নামতে বাধয় হয়েছি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আসলে আমাদের আন্দোলনটা হচ্ছে ফলাফল পুর্নমূল্যায়ন করার জন্য। পাঁচজন শিক্ষার্থীকে কেন ফেল করানো হলো এ বিষয়টা আমরা জানতে চাই। যারা ফেল করেছে এদের জীবন থেকে একটা বছর চলে যাবে এটা আমরা মানতে পারিনা। যতক্ষণ না এ বিষয়টা সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।'
পরীক্ষায় ফেল আসা শিক্ষার্থী শাফিন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, আমাদের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় শিক্ষকরা নিজেদের মনমত করে রেজাল্টশিট দিয়েছেন। আমরা স্যারদের কাছে গিয়েছি কিন্তু লাভ হয়নি। ওনারা কোন ভাবেই আমাদের কথা শুনেন নাই। ২২/২৩ দিন ধরে গিয়েছি তারা প্রশ্নপত্র মূল্যায়ন করেননি বরং তারা বলেছে যেটা রেজাল্ট আসছে সেটাই মেনে নিতে। যতক্ষণ না ভিসি স্যারের কাছ থেকে সমাধানের আশ্বাস পাচ্ছি ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।'
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর আশাবুল হক। তিনি বলেন, 'যেহেতু একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এটা সমাধান করতে কয়েকটি স্টেপ রয়েছে।হুট করেই সমাধান করা যাবেনা। আমি দুজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে ভিসি স্যারের কাছে যাচ্ছি তারা তাদের সমস্যা কথা বলবেন। তারপর কিভাবে সমস্যাটা সমাদান করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে।'
শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর অভিযোগের বিষয়ে গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের সভাপতি প্রফেসর টিএম এম নূরল মোদ্দাসের চৌধুরী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রসঙ্গ নিয়েই আমরা জরুরী মিটিংয়ে বসেছি। আশা করছি সমাধান হবে।'
তবে এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আলী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, 'ওদের সমস্যার কথাগুলো ভিসি স্যারের সাথে কথা বলতে হবে। ওদের বলেছি তোমরা তালা খুলে দাও অন্যান্য বিভাগের পরীক্ষা চলছে, ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা সমস্যা সমাধানের পথেই এগোব।'
ঢাকা, ২৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//ওএফ//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: