Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
হঠাৎ তুলে নিয়েছেন অভিযোগ...

রাবি ছাত্রলীগের মারধর: কানের পর্দা ছিঁড়ে গেছে সেই ছাত্রের!

প্রকাশিত: ২৮ আগষ্ট ২০২২, ০১:৩৭

 রাবি ছাত্রলীগের মারধর: কানের পর্দা ছিঁড়ে গেছে সেই ছাত্রের!

রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে তিন ঘন্টা আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিলো অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলামকে। কেড়ে নেয়া হয়েছিলো অর্থও। হুমকি দেয়া হয়েছিলো আবারেরর মত মেরে ফেলার। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই তীব্রতর ছিলো সেটা চিকিৎসকের দেয়া প্রতিবেদন থেকেই জানা গেল। সেই ছাত্রের কানের পর্দা ছিঁড়ে যাওয়ায় আর কানেই শুনতে পাচ্ছেন না। মারধরের কয়েক দিন কেটে গেলেও শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। গত ১৯ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে ছাত্রলীগ নেতাদের তান্ডব সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।

এ ঘটনার পর পরই আন্দোলন নামে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা। সেখানে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ছাত্রলীগ নেতার ভাস্করের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তারা। তবে কোন কারণ ছাড়াই তার দেয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি।

গত বুধবার রাতে কানের ব্যথা নিয়ে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর বৃহস্পতিবার তিনি পরীক্ষার প্রতিবেদন পান। হাসপাতালের নাক কান ও গলা বিভাগের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সুব্রত ঘোষ জানান, প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই রোগীর কানের পর্দা ছেঁড়া।

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, গত বুধবার রাতে হতে কানে ব্যথা অনুভূত হয়। অসহ্য ব্যথা নিয়ে রাতেই তিনি রাজশাহী মেডিকেলের নাক কান ও গলা বিভাগের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা দেন। বাইরে গিয়ে তিনি সেগুলোর পরীক্ষা করান। প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসক জানান, তাঁর বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেছে। তিনি এখনো শুনতে পারছেন না। এ ছাড়া মারধরের কয়েক দিন পর তিনি শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন।

হাসপাতাল থেকে পাওয়া সামছুলের ছাড়পত্রে লেখা আছে, Ruptured TM (Left)। এর অর্থ হচ্ছে বাঁ কানের কিছু একটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে তিনঘন্টা আটকে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষার্থী সামসুল ইসলাম। গত বুধবার (২৩ আগস্ট) এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী।

লিখিত আবেদনে তিনি উল্লেখ করে বলেন , গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ২৩২ নম্বর কক্ষে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা আমাকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন, আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আমার মানিব্যাগ থেকে ছিনিয়ে নেন।

পরবর্তীতে তিনি আমার কাছে তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেইসঙ্গে আমার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হন। আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং তার বিরুদ্ধে এখন আমার আর কোনো অভিযোগ নাই। এমতাবস্থায় প্রক্টর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন, আমার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি।

তবে কোন চাপে পড়ে অভিযোগ তুলে নিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, অভিযোগ দেয়ার পর ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর চমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছেন এবং অনুতপ্ত হয়েছেন। আমি ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। সেইসাথে সার্বিক দিক বিবেচনা করেই এ অভিযোগটি প্রত্যাহার করেছি।

অভিযুক্ত ভাস্কর সাহা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আমি ওর (সামছুল ইসলাম) কাছে ক্ষমা চেয়েছি। পরবর্তীতে সে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন দিয়েছে। আমাদের ব্যাপারটা মিটমাট হয়ে গেছে।' প্রক্টর প্রফেসর আশাবুল হক ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আমার কাছে অভিযোগ তুলে নেয়ার একটি লিখিত আবেদন দিয়েছে ওই শিক্ষার্থী। তবে কি কারণে তদন্তচলাকালে অভিযোগ প্রত্যাহার করলো সে বিষয়টা আমরা ক্ষতিয়ে দেখব।'


 ২৭ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ