পাবিপ্রবি লাইভ: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেছেন, পড়ালেখাকে আনন্দময় করার জন্য প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিজ্ঞান মনস্ক, প্রযুক্তি মনস্ক, মানবিক সৃষ্টিশীল জাতি গঠনের উপযোগী শিক্ষা নীতিমালা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ‘বঙ্গবন্ধুঃ বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহানায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। 'বাংলাদেশ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ বিরোধী। একদিকে মুক্তিযুদ্ধের সমমনা ও উল্টোদিকে যারা তাদের কোনো আদর্শ নেই। অগ্নি সন্ত্রাস, এতিমের অর্থ আত্মসাত, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গ্রেনেড দিয়ে উড়িয়ে দেয়া এগুলো কোনো আদর্শ হতে পারে না। যুদ্ধের সময়টা মুজিবের নামে যুদ্ধ হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর এদেশ মুজিবের দেশ নামে পরিচিত।'
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনের দিকগুলি দেখলে দেখা যায় সেই সময়ে বিশ্বের অনেক জাতীয়তাবাদী নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শোষিতের গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গণতন্ত্র ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলেছিলেন। তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক। বঙ্গবন্ধু মানুষকে চিনতেন, বুঝতে পারতেন। মানুষের হৃদয়কে বুঝতেন।
মন্ত্রী বলেন, ৭০ এর নির্বাচনের বিজয়ের মাধ্যমে মানুষের স্বাধীনতার অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাঙালির নেতৃত্বের আসনে তিনি মহানায়ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। একাত্তরের ঘাতক, পচাত্তরের ঘাতক, ২০০৪’র গ্রেনেড হামলাকারীরা এবং ২০১৩-২০১৪ এর অগ্নি সন্ত্রাসীরা এক ও অভিন্ন। আজও তারা আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর জন্য চেষ্টা করছে। এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ১৫ ই আগস্টে যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, আমরা শুধু তাদের বিচার করতে পেরেছি। তার পেছনে সকল কুশিলবদেরকে আমরা এখনও সরাসরি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারিনি। সে কাজটি করার দাবি এখন জোড়ালো হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাকে গত ৪১ বছরে অন্তত ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
একাত্তরের ঘাতক, পচাত্তরের ঘাতক, ২০০৪ এর ২১ শে আগস্টের ঘাতক, ২০১৩-১৪ এর অগ্নি সন্ত্রাসের ঘাতকের দল এক ও অভিন্ন। আজও তারা আস্ফালন করে আরেকটি ১৫ই আগস্ট ঘটানোর জন্য। এজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। যেন কোনোভাবেই এরা সফল হতে না পারে।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা-২ আসনের সাংসদ আহমেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-৪ আসনের সাংসদ নুরুজ্জামান বিশ্বাস, টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, বাংলাদেশ সরকারি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. নূরজাহান বেগম।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত স্মারক মূর্যাল ‘জনক জ্যোতির্ময়’ এ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের মাঝে গবেষণা সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড এবং স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, পাবনা ২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ করির, পাবনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ্বাস এবং বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের অধ্যাপক ড। নূর জাহান বেগম।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির ভালোবাসার কাঙ্গাল। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ইচ্ছায় এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্ত চিন্তার জায়গা। সেজন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করছি। আমাদের পরিবার শৃঙ্খলাবদ্ধ। শিক্ষা-গবেষণার উৎকর্ষতা বাড়াতে চাই। আমাদের ভিশন আগামীর বাংলাদেশকে নিয়ে। আমার বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটা গড়ে তুলব।
ঢাকা, ২৬ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: