Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের হয়রানি, নিপীড়নের প্রতিবাদ...

রাবি: ''বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গুন্ডাদের লালন করা হচ্ছে''

প্রকাশিত: ২৩ আগষ্ট ২০২২, ০০:০৯

শিক্ষার্থীদের হয়রানি, নিপীড়নের প্রতিবাদ

রাবি লাইভ: 'এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে আবরারের পরিনতি করার হুমকি দেয়া হয়। আপনারা ভেবে দেখেছেন এরকম কিছু হলে আপনারা কোথায় থাকবেন? এ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারা কেমন হবে, পারবেন সামলাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গুন্ডাদের লালন করা হচ্ছে। বছরের পর বছর নিশংস কান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।'

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের হয়রানি, নিপীড়ন ও ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে মানববন্ধনে এ কথা বলেছেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড.সালেহ হাসান নকীব।

সোমবার (২২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য'র আয়োজনে এ কর্মসূচীতে সম্প্রতি আবাসিক হলে শিক্ষার্থী সামছুল হাসানকে আটকে রেখে নির্যাতনের জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহার শাস্তির দাবি জানানো হয়।

অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. ফরিদ খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রফেসর নকীব আরও বলেন, সমস্যাটা এক অর্থে রাজনৈতিক। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বা শিক্ষক রাজনীতি যে ফর্মে রাজনীতি আছে সেটা রাজনীতি বলে মনে হয়না। আমরা দেখছি সিন্ডিকেটবাজী এবং শিক্ষকরাও শিক্ষরাও এর বাহিরে নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্রে দেখতে চাই, যেখানে শিক্ষার্থীরা মর্যাদার সহিদ ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের আইন, নিয়ম-কানুন সকল শিক্ষার্থীর জন্য এক হবে কিন্তু এর লেস মাত্র দেখছিনা। আমরা হয়ত উপরিভাগ থেকে দেখি কিন্তু এরকম ঘটনা কত ঘটছে। প্রশাসনকে বলব বেশী জিনিস নেই, আমরা চর দখল করার মানুষ না। আমাদের শুভবুদ্ধির আর ভয়কে জয় করতে হবে।শিক্ষার্থীরা যখন ভয়কে জয় করতে পারবে তখন নৈরাজ্য বন্ধ হবে। এরকম চলতে থাকলে সেরকম দিন আসবে, আর আসলে কুলাঙ্গার দেখেও না দেখার ভান করছে তাদের খোঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা এসব ঘটনার অবসান চাই।

আরবি বিভাগের প্রফেসর ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, আমাদের বারবার একই দাবি নিয়ে আসতে হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মূল প্রাণ কিন্তু সেখানেই তারা নিরাপদ নয়, প্রতিনিয়ত তারা নির্যাতন, নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে। শোকের মাসেও একযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তান্ডবলীলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। একটা শিক্ষার্থী তার নিজের খরচ চালিয়ে পরিবারের সার্পোটের জন্য চেষ্টা করে তাকে তিনঘন্টা ধরে নির্যাতন চালানো হয়। সেই বুয়েটের আবরারের পরিস্থিতি তৈরি করার সাহস পায়। অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত ভাস্করের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, বিশ্বের কেন দেশে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের জন্য শিক্ষকদের দাঁড়াতে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো ভিসি,ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর, প্রোভোস্ট আছে।তারা দায়িত্বের জন্য সম্মানি নিয়ে থাকেন, এত কিছুর পর ছাত্ররা নিরাপদ নয়। এমন অবস্থা হয়েছে যে শিক্ষার্থীদের আবরার মত মেরে ফেলবে। মাঝে- মাঝে তারা বলেন লিখিত অবিযোগ দেয়নি সেজন্য ব্যবস্থা নিতে পারছি না এমন দায় দায়িত্বীন বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষক সমাজের জন্য লজ্জার। দায়িত্ব নিয়ে দায়িত্ব পালন না করার কারণে আমাদের কথা শুনতে হচ্ছে। দায়িত্ব পালন না করতে পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। মেরুদণ্ড আছে এমন শিক্ষরা দায়িত্বে আসবে। মনে রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে গেলেএসি রুমে সুখের ঘুম আর হবে না।

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, ক্যাম্পাসে অসংখ্যা ঘটনা ঘটছে কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট পাওয়া যায়না। শুধু রাবিতেই নয় প্রত্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ লুটপাত করছে। ক্যাম্পাসে ভয়ের ত্রাশ তৈরি হয়েছে। গুটি কয়েক ছাত্রলীগ নেতারা এ সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। সব শিক্ষার্থীরা এক হলে তারা পালানোর জায়গা পাবে না।

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের রাবি শাখার সভাপতি মেহেদি মুন্না বলেন, ছাত্রলীগের ছিনতাই, চাঁদাবাজি নিত্য দিনের ঘটনা। কিছুদিন পূর্বে দেখেছি ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকান্ডে জড়িত ছাত্রলীগ নেতার একাউন্টে ৪২ লক্ষ টাকা থাকে। প্রশাসন বলে সে এখন ছাত্র নয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে পারি না।তাহলে সে কিভাবে হলে থেকে কাজ করে। যতদিন ফ্যাসিবাদ চুরমার না হবে ততদিন ছাত্রলীগের তান্ডব চলবে। একের পরর এক কান্ড করে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহন করে না। যদি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হয় দরকার পরলে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা লাগানো হবে,ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে। কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব।

আমান উল্লাহ খান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নাই। আমরা দেখেছি যারা অপকর্মের সাথে জড়িত তারা মূল পদে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষোভটাকে প্রশমিত করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং সেটা কমিডিতে রূপান্তর করেছে প্রশাসন।

বর্তমান প্রশাসনের ভিসি, প্রো ভিসি যে স্বচ্ছতা দেখাচ্ছে কিন্তু এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশাসনের ভন্ডামি ফুটে উঠেছে। আমরা ক্যাম্পাসে ঘুমানোর নিশ্চয়তা চাই, জনগনের টেক্সের টাকায় কোন সন্ত্রাসী চলতে পারে না। যারা এমন কাজে জড়িত তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করে কলঙ্ক দূর করতে হবে।

ঢাকা, ২২ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//ওএফ//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ