Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রাবিতে ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৯ আগষ্ট ২০২২, ০৬:৫১

‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক বক্তৃতা

রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক এক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বক্তৃতা প্রদান করেন আইবিএস-এর বন্ধবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো ভিসি প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম। ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ নাজিমুল হকের সভাপতিত্বে এই বক্তৃতা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউটের ফেলো শুভেন্দু সাহা।

বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, রবীন্দ্রনাথ দৃষ্টিসীমায় রেখেছেন তাঁর সময়ের সংকটদীর্ণ উপমহাদেশকে, এবং সেই সূত্রে ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের চূড়ান্ত অন্যায়কে। তাই তাঁর ভাবনাতেও আপেক্ষিকতার ছোঁয়া লাগে। তাঁর চৈতন্য জগৎকে আচ্ছন্ন করে প্রাচ্য-পৃথিবী। আশা জাগান এই বলে, যে ওই মহামানবের আবির্ভাব ঘটবে এই প্রাচ্যভ‚মিতেই। অপেক্ষা তাঁর আগমনের আশায়। গৌতম বুদ্ধ ও যিশু খৃষ্ট, এই দু’জনের ব্যক্তি মায়া তাঁকে সারা জীবন আচ্ছন্ন রেখেছে। মানব অভ্যুদয়ে হয়ত তিনি স্বপ্ন দেখেছেন তাঁদের মত কারো আবির্ভাবের; অথবা তাঁদের প্রেরণায় জাগ্রত মানব সমুদয়ের আগামীদিনের সূর্যকে আহ্বান করার। তবে নিরাসক্ত বিবেচনায় প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিভাজন বোধ হয় দৃষ্টিভ্রম।

কারণ, গোলাকার পৃথিবীতে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সম্পূর্ণত আপেক্ষিক। এতে অন্তর্জাত কোন সত্য নেই। রবীন্দ্রনাথের কাছেও, না। ‘ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মেনে চারিদিকে’ যখন তিনি চেয়ে দেখেন, তখন বিচ্ছিন্নতা-ব্যবধান, সব মিলিয়ে যায়। যদিও প্রত্যক্ষের সীমা ও তাতে সীমাহীন অন্যায় ‘আঘাতে-আঘাতে বেদনায়-বেদনায়’ তাঁকেও বিচলিত করে। তাকে সংহত করে নির্বিকার নিরাসক্তিতে তিনি ঘোষণা করেন, এও তাঁর আপনাকে চেনা। ‘সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে’- এ সত্য কঠিন, কখনো বঞ্চনা করে না। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ অবশ্য ঘটে চলে ঠিকই। বিপন্নতার প্রতিভাস বাড়ে বই কমে না। তবে যেখানে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মানব অভিজ্ঞতার পূর্ণ স্বরূপ তিনি মেলে ধরেন, সেখানে সুখ-দুঃখ, তৃপ্তি-অতৃপ্তি, সবই তুল্য-মূল্য। চ‚ড়ান্ত বিচারে জীবনের জঙ্গমতাতেই সত্যের পূর্ণতা। এবং এই পূর্ণতার সাধনায় তাঁর চৈতন্য লোক আপন ঐতিহ্যের প্রেরণায় উদ্ভাসিত থাকে।

অনুষ্ঠানে ভিসি গগন হরকরা, লালন সাঁইসহ মধ্যযুগীয় মানবপ্রেমী অন্তঃসাধক রামানন্দ ঠাকুর, রবিদাশ, গুরু নানকের কথা উল্লেখ করে বলেন, মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন তাঁর বাউল গানের সংকলন ‘হারামনি’র ভূমিকায় লিখেছেন আমাদের দেশে যারা নিজেদের শিক্ষিত বলেন তারা প্রয়োজনের তাড়নায় হিন্দু-মুসলমানের মিলনের নানা কৌশল খুজে বেড়াচ্ছেন। অন্য দেশের ঐতিহাসিক স্কুলে তাদের শিক্ষা। কিন্তু আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত, প্রয়োজনের মধ্যে নয়, পরন্ত মানুষের অন্তরতর গভীর সত্যের মধ্যে মিলনের সাধনাকে বহন করে এসেছে।’ উপাচার্য সত্য সাধনকে চিরজাগ্রত রাখার আহবান জানান।

তিনি আরন্যপুত্র শ্বেতকেতুকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘জগত আগেও ভালো ছিল, প্রীতিময় ছিল-আজও আছে-আগামীতেও থাকবে’। মানুষের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়লেও মানবতাই মানবকে রক্ষা করবে, বিশ্ব সভ্যতাকে রক্ষা করবে। মানুষ শেষ হয়ে গেলেও তার স্বপ্ন তাকে আগামীর দিশা দেবে। দূর হোক মানবতার সংকট, জয় হোক মানবতার।

ঢাকা, ০৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//ওএফ//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ