রাবি লাইভ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাত ১২ টার দিকে নগরীর ধরমপুর পূর্বপাড়ার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল হাসাপাতালে (রামেক) নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে লিয়াকত আলী জোয়ার্দার মহানগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মতিহার থানা পুলিশ নিহতের বাবার দায়ের করা হত্যা মামলায় স্বামী ইশতিয়াক রাব্বিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম রিক্তা আক্তার (২১)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালির জোতপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম ইশতিয়াক রাব্বি। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা।
সহপাঠীসূত্রে জানা যায়, কলেজ থেকেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে পারিবারিকভাবে দুই বছর আগে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকেই তারা বাসা ভাড়া নিয়ে একসাথে থাকতো। কিছুদিন ধরেই তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিলো। গতকাল রাতে আমরা তার মৃত্যুর খবর জানতে পারি। এ ঘটনা জানতে পেরে আমরা রামেকে যায়। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
আজ শনিবার বিকেল সোয়া ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে রিক্তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জানাযার পূর্বে নিহত রিক্তার পিতা লিয়াকত আলী জোয়ারদার বলেন, আমি কৃষক মানুষ। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করি। আমাদের পরিবারের কেউ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসতে পারেনি। আমার মেয়ে ছিল একটা রত্ন। সে অনেক পরিশ্রম করে এ অবধি এসেছিল। আমার মেয়ের হত্যাকারীর সবোর্চ্চ শাস্তি চাই। জীবন গেলেও আমি খুনিদের সাথে আপোষ করবো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমি রাবি পরিবারের পক্ষ থেকে রিক্তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তার বাবা মামলা করেছে। আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা তার পরিবারকে সহায়তা করবো। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে আমরা ছেলেটার ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বাতিল করবো।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, মেয়ের পিতা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মেয়েটির স্বামীকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে মেয়েটির লাশ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
ঢাকা, ৩০ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এসএইচ//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: