রাবি লাইভ: হামলা, মামলা আর মারধরের ভয় বলে কথা। এই ভয়েই বাড়ি ছেড়েছেন একজন শিক্ষার্থী। তার ভয় ও আশঙ্কা বাড়িতে গেলে হামলা-মামলার শিকার হবেন তিনি। প্রতিপক্ষ তাকে মেরে ফেলবে। তিনি সাফ জানালেন আমি ওই ভয়েই হলে ঈদ উদযাপন করেছি। স্বজনদের ছেড়ে বাধ্য হয়েই আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলে অবস্থান করছি।
প্রত্যক্ষদর্শিরা মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা এমন খবরই দিয়েছেন। বলেছেন এর বাইরে আর কিছু করার ছিলনা তার। কেবল অশ্রুসিক্ত নয়নে সব কিছুই মেনে নিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।
জানা যায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম রফিকুল ইসলাম শান্ত। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডি ইউনিয়নের রসিদাবাদ গ্রামে। তার বাবা কাজি মো. নুরুল ইসলাম একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। এতো কিছুর পরেও তিনি এলাকায় যেতে পারেননি। তার মা-বাবা তাকে এলাকায় যেতে বারন করেছে। গেলেই হামলার শিকার হবেন শান্ত।
রফিকুল ইসলাম অনেকটা কান্নাভেজা কন্ঠে জানায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকার এক মেসে থাকেন। তবে ঈদের ছুটির কারণে মেস ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে তিনি তার বন্ধুর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হাবিবুর রহমান হলে উঠেছেন।
শান্ত জানায়, তাদের গ্রামের বসতভিটার জমি নিয়ে অনেক আগে থেকেই দ্বন্দ চলছে। তারা খুবই প্রভাবশালী। বেশ দাপট রাখে ওই প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশীর সঙ্গে দীর্ঘ-শত্রুতার জেরে হামলার ভয়ে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যেতে মান করেন তার পিতা-মাতা। বাড়িতে গেলে হামলার শিকার হবেন বলে আশঙ্কা তাদের। সে কারণেই গ্রামে যাওয়া হয়নি।
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ঈদের দিন বিকেলেও তার ভাইয়েরা হামলার শিকার হয়েছেন। ওরা মারধর করেছে। এতে শান্তের এক ভাইয়ের পায়ের রগ কিছুটা কেটে দিয়েছে তার প্রতিবেশী। এ ঘটনায় শান্তর বড়ভাই রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে স্থানীয় পটিয়া থানায় মামলা দায়ের করায়, একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পটিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তির নাম আবদুস সালাম। তিনি মামলার ১ নম্বর আসামি। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে তারা বের হয়ে এসে কি করে এই ভয়ে অস্থির শান্তের পরিবার। মামলার বিবাদীরা বলছেন, ঈদের দিন কোনো মারামারির ঘটনাই ঘটেনি। তবে তাদের সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। বিষয় তদন্তের দাবী রাখে।
এ ব্যাপারে পটিয়া থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার মূল আসামি মো. আবদুস সালামকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত কাজ এখনো চলছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেব। কোন পক্ষের কতটুকু দোষ এ ব্যাপারে এখনই স্পস্ট করে কিছু বলতে নারাজ ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন আমরা এই ঘটনার মুল উৎপত্তি কোথায়, কারো কোন ইন্ধন আছে কি না তা খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেব।
ঢাকা, ১২ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: