Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

১৪ বছরে পদার্পণ পাবিপ্রবির

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২২, ০৬:৪২

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আবদুল্লাহ আল মামুন: দেখতে দেখতে তেরোতম বছর শেষ করে চৌদ্দতম বর্ষে পদার্পণ করেছে দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। ২০০৮ সালের ৫ জুন দেশের ২৯তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৭ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ৫ জুন (রোববার) বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

২০০৯ সালের ৩১ মার্চ তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. আমিন উদ্দীন মৃধ্যা-র হাত ধরে ১২ জন শিক্ষক, ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৪টি অনুষদে ১৮০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। পাবনার টিচার্স ট্রেনিং কলেজেকে (টিটিসি) প্রথমে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করলেও ২০১৩ সালে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পাশে রাজাপুর নামক স্থানে ৩০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। বর্তমানে ৫টি অনুষদের অধীনে ২১টি বিভাগে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। পাশাপাশি ১৩ জন প্রফেসরসহ মোট ১৭৭ জন শিক্ষক পাঠদান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

এখনো পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন ৪৫০০ এরও অধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষাজীবন শেষে দেশ এবং বিদেশের কর্মস্থলগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তাঁরা। সম্প্রতি টেক জায়ান্ট কোম্পানি ইন্টেলে ইন্টার্ণশীপের সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বিবিদ্যালয়ের ৩য় ব্যাচের ইইই বিভাগের অনুপ কুমার। সিএসই ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু রায়হান সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন আরেক টেক জায়ান্ট কোম্পানি অ্যামাজনে। মেধার স্বাক্ষর হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেয়েছেন ২৩ জন শিক্ষার্থী।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি একাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, সেন্ট্রাল লাইব্রেরী, মেডিকেল সেন্টার, সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়া, সেন্ট্রাল মসজিদ রয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে দুইটি ডরমেটরি। শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য রয়েছে সাদা খয়েরি রঙের ৯ টি নিজস্ব বাস।

দীর্ঘ তেরো বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এগুলোর মধ্যে স্বাধীনতা চত্বর, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ স্মারক মুর‍্যাল ‘জনক জ্যোতির্ময়’, কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭ শতাংশ জমি নিয়ে তৈরী করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক। প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর গানে মুখর থাকে স্থাপনাগুলোর প্রাঙ্গণ। বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে ঘুরতে এসে এই স্থাপনাগুলোর সাথে ফ্রেমবন্দী হচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন সমান তালে। পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটি, কণ্ঠস্বর আবৃত্তি দল, অনিরুদ্ধ্য নাট্যদল, সলভার গ্রীন, জোনাকি সহ শিক্ষার্থীরা গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠন।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আছে ৪৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ। এই প্রকল্পের অধীনে নির্মানাধীন রয়েছে ১২ তলা ভিত বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন, ১০ তলা ভিত বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবন, টিএসসি, কনভেনশন সেন্টার, শিক্ষক-কর্মকর্তা ভবন, সনাতনধর্মাবলম্বীদের জন্য মন্দির, পুলিশ ও আনসার ক্যাম্প। এছাড়াও নির্মানাধীন আছে প্রাচীন এবং আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে ডিজাইন করা একটি নান্দনিক গেট। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী থাকাকালীন সময়ে শুরু হওয়া এই মেগা প্রকল্প চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে পুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত চেহারা, ভিন্ন এক পাবিপ্রবিকে দেখতে পাবে সারাদেশের মানুষ।

তবে এত কিছুর মধ্যেও এখানে শিক্ষক, ক্লাস রুম, ল্যাবের সংকট রয়েছে। প্রকট আকার ধারণ করেছে শিক্ষার্থীদের সেশনজট। আছে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের সমস্যা, ক্যাফেটিরিয়ার খাবারের মানগত সমস্যা।

গত এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয়টি উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. হাফিজা খাতুন এবং প্রো-ভিসি হিসেবে যোগদান করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন এবং অনুজীব বিভাগের প্রফেসর ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান যোগদানের পর অনেকেই পাবিপ্রবিকে নিয়ে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। নতুন ভিসি এবং প্রো-ভিসির আগমনের পর অনেকগুলো উদ্যোগ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মনে সাড়া জাগিয়েছে। ছয় বছর পর সেন্ট্রাল নবীন বরণ পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। আশা দিয়েছেন দ্রুতই আয়োজন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের। আশ্বাস দিয়েছেন সমস্যাগুলোর সমাধান করবেন অতিদ্রুত।

নতুন ভিসি এবং প্রো-ভিসির কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত সেশনজট কমানোর উদ্যোগ গ্রহনের পাশাপাশি যেন শিক্ষক সংকট, ক্লাশ রুম সংকট, ল্যাব সংকট কাটানোর উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।

ঢাকা, ০৪ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ