Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

পাবিপ্রবি: র‍্যাগিংয়ের বিচার চেয়ে প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের আবেদন

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২২, ০৬:৪৩

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

পাবিপ্রবি লাইভ: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ১২তম ব্যাচের উপর হওয়া র‍্যাগিংয়ের বিচার চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৩ মে) বিকেল ৩টার সময় হলে থাকা ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দরখাস্তের মাধ্যমে বিচারের আবেদন জানিয়েছেন।

দরখাস্তে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, গত ২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নুরুল আমিন, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ সহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী গণরুমে ১৩ম ব্যাচকে র‍্যাগ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তাতে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অসম্মত হলে তাদেরকে র‍্যাগ দেওয়া হয় এবং অশালীন আচরণসহ শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। আর বিষয়টি যদি কাউকে বলা হয় তাহলে রাজনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এই অবস্থায় ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে আছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

তাদেরকে র‍্যাগ এবং হেনস্তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য তারা হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টরের কাছে আবেদন জানান।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত নুরুল আমিনের ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমার নামে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা ভিত্তিহীন। আমি নিজের পড়াশোনা, ডিবেট, রোভার স্কাউট এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ১২তম ব্যাচের ছোট ভাইদের সাথে কথা বলারই সুযোগ হয়না, ওদের র‍্যাগ দেওয়া তো দূরের বিষয়।

আরেক অভিযুক্ত নূর মোহাম্মদ বলেন, গণরুমের দিকে আমার যাতায়াত নাই। আমার ডিপার্টমেন্টে সব সময় পড়াশোনার চাপ থাকে, আমাকে সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। পাশাপাশি আমার টিউশনি আছে। আমার নামে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

দরখাস্তের বিষয়ে হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টরের কাছে জানতে চাইলে তারা ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, শিক্ষার্থীদের দেওয়া দরখাস্তটি পেয়েছেন এবং এই বিষয়ে খতিয়ে দেখবেন।

এদিকে সোমবার (২৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট বরাবর আরেকটি দরখাস্তের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিচার চেয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।

ঐ দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়, গত ২১ মে হলের গণরুমে অর্থনীতি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নুরুল আমিন ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দিলে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি ১১তম ব্যাচকে অবহিত করে। পরে রাত ১১টায় তারা বিষয়টি নিয়ে নুরুল আমিনের সাথে ব্যাচের সবাই হলের ছাদে মিটিংয়ে বসলে নুরুল আমিন তাদের উপর উপর চওড়া হয় এবং তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে নুরুল আমিন তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পরে নুরুল আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থতাবোধ করলে ৩১৩ নাম্বার রুমে তার রাজনৈতিক বড় ভাই সোহানুর রহমান সোহানের রুমে প্রবেশ করে। এরপর তারা নুরুল আমিনের বিষয়ে আর কিছু জানেননা। কিন্তু ২২ তারিখ তাদের বিরুদ্ধে নুরুল আমিন কে মারধরের অভিযোগ তুলে মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচার চালানো হয়। তাদের বিরুদ্ধে চালানো মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচারের জন্য তারা হল প্রভোস্টের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।

অপপ্রচারের শিকার অনিক পোদ্দার নামে শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- ”হলে আমাদের ১১তম ব্যাচের সবাই মিলে একটা এন্টি র‍্যাগিং মিটিং করি, সেখানে নুরুল আমিনও ছিলো। মিটিংয়ের এক পর্যায়ে নুরুল আমিন অসুস্থতা বোধ করলে আমি তাকে এক বন্ধুর মাধ্যমে রুমে পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এরপরের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। অথচ সকাল বেলা শুনি আমি নাকি ওকে মারধর করি। এটি ভিত্তিহীন একটা অভিযোগ। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য কেউ আমার বিরুদ্ধে এইসব অপপ্রচার চালিয়েছে।”

আরেক শিক্ষার্থী শাহ আলম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- “২১ মে রাতে ১১তম ব্যাচের মিটিং উপলক্ষে আমাকে জানানো হয় এবং বলা হয় নুরুল আমিনকেও যেন সাথে নিয়ে আসি। আমি নুরুল আমিনের রুমে তাকে না পেয়ে চার তালার ছাদে যাই এবং সেখানে তাকে দেখতে পাই। মিটিংয়ের এক পর্যায়ে নুরুল আমিন অসুস্থতা বোধ করলে আমি তাকে রুমে পৌছে দিতে চাইলে সে ৩১৩ রুমে যায়। এরপরের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। অথচ সকালে আমার নামে নামে নুরুল আমিনকে পেটানোর অভিযোগ করা হয়। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা একটা অভিযোগ।”

২১ মে রাতে নুরুল আমিন অসুস্থ অবস্থায় সোহানুর রহমান সোহানের রুমে প্রবেশ করেছে কিনা সেটা জানতে চাইলে সোহানুর রহমান সোহান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান- ”নুরুল আমিনকে সুস্থ অবস্থায় আমার রুম থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত বারোটার দিকে আহত অবস্থায় আমার রুমের সামনে দেখতে পাই।”

এই বিষয়ে নুরুল আমিন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- “ওরা আমাকে ছাদে নিয়ে মেরেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর দেখা যায় আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে। আমাকে মারার এক পর্যায়ে আমি তিনতলায় এসে অচেতন হয়ে পড়ি। পরে রোভার স্কাউটের দুইজন ভাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসবের পরও ওরা কীভাবে বলছে আমি আপনা আপনি অসুস্থ হয়ে পড়ি। এগুলো সবগুলো মিথ্যা অভিযোগ।”

হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসলাইভকে জানানো হয়েছে তারা এইসব বিষয়ে অবগত আছেন এবং সবগুলো বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। তারা আশা করছেন প্রকৃত অপরাধ যারা যারা করেছেন তারা অবশ্যই বিচারের আওতায় আসবে।

ঢাকা, ২৪ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএএম//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ